সীতারাম ইয়েচুরি। ফাইল চিত্র।
যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় কেন্দ্র-রাজ্যের যথাযথ সম্পর্ক রক্ষা এবং নির্বাচনী সংস্কারের দাবিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁদের পরিচালিত সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এক মঞ্চে আসতে পারেন। কিন্তু তার বাইরে তৃণমূলের সঙ্গে আর কোনও রাজনৈতিক সমঝোতার প্রশ্ন নেই বলে স্পষ্ট করে দিসেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। সেই সঙ্গেই তাঁর বক্তব্য, আগামী লোকসভা ভোটের আগে দেশ জুড়ে কোনও ‘মহাজোট’ হচ্ছে না। যা হবে, সেটা আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে বোঝাপড়া। আর বাদবাকি সব সম্ভাবনা তোলা থাকবে ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য।
অ-বিজেপি সব দলকে একজোট করার লক্ষ্যে ইদানীং তৃণমূল নেত্রী সক্রিয়। সেই লক্ষ্যেই আগামী শীতে ব্রিগেড সমাবেশও করতে চলেছেন তিনি। সিপিএমের কাছেও এখন মূল লক্ষ্য, বিজেপির বিপদ ঠেকানো। তা হলে বিজেপি-বিরোধিতার জন্য তৃণমূল এবং সিপিএম কাছাকাছি আসতে পারে কি না, তা নিয়ে জল্পনা আছে বিস্তর। আলিমুদ্দিনে দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকের অবসরে বৃহস্পতিবার ইয়েচুরি বুঝিয়ে দিয়েছেন, ‘‘বিজেপি গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য বিপদ। সেই বিপদ মোকাবিলায় তৃণমূলের সঙ্গে যাওয়ার কথা একটা রসিকতা মাত্র! গণতন্ত্রকে তৃণমূল কী ভাবে ধ্বংস করছে, বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটেই তা ফের প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।’’ তৃণমূলের মেরুকরণের নীতির জন্যই বাংলায় বিজেপির দ্রুত উত্থান ঘটছে বলেও ইয়েচুরির মত।
তৃণমূলের সঙ্গে মহাজোটে যাওয়া তো দূরের কথা, মমতা ও নরেন্দ্র মোদীর দল যে একই মুদ্রার দুই পিঠ, জাতীয় স্তরে তা দেখানোর জন্য ২৪ জুলাই দিল্লিতে সংসদের বাইরে ধর্নার আয়োজন করছে সিপিএম, সিপিআই, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক ও সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন। ত্রিপুরায় বিজেপি এবং বাংলায় তৃণমূল কী ভাবে ‘গণতন্ত্রের হত্যা’ করছে, তা সামনে এনে প্রতিবাদ জানাতেই ওই ধর্না। দুই রাজ্য থেকেই বাম নেতা-কর্মীদের ধর্নায় যোগ দিতে যেতে বলা হয়েছে।
প্রশ্নের জবাবে ইয়েচুরি এ দিন বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে কোনও মহাজোট হবে না। আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে রাজ্যভিত্তিক কিছু বোঝাপড়া হবে। বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখার জন্য ভোটের পরে বাকি যা করণীয়, করা হবে। আমাদের মনে হয়, ১৯৮৯, ১৯৯৬ বা ২০০৪ সালে যে ভাবে ভোট-পরবর্তী জোট গড়ে উঠেছিল, এ বারও তা-ই হবে।’’ সে ক্ষেত্রে বিজেপিকে দূরে রাখতে তৃণমূল এবং সিপিএম একই জোটে সামিল হবে কি না, তা অবশ্য এখনই ভাঙছেন না কেউ!