আখু চিংগাংবাম। — নিজস্ব চিত্র
শিশু আবাসের ১৩ বছরের একটি মেয়ের হৃদযন্ত্র খারাপ। টাকা নেই অস্ত্রোপচারের। সে খবর পেয়ে তার পাশে দাঁড়ালেন মণিপুরের গায়ক আখু চিংগাংবাম। গান গেয়ে ওই টাকা জোগাড়ের পণ ধরেছেন তিনি।
ইম্ফলের ‘কারমেল জ্যোতি চিলড্রেনস হোমে’ থাকে মেয়েটি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার হৃদযন্ত্রে ২৯ মিলিমিটারের একটি ছিদ্র রয়েছে। তার জেরে শারিরীক নানা সমস্যায় ভুগছিল মেয়েটি। তার বাবা বালি খাদানের দিনমজুর। নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, হৃদযন্ত্রের ছিদ্র বন্ধ করতে জটিল অস্ত্রোপচার করতে হবে। সে জন্য প্রয়োজন কয়েক লক্ষ টাকার।
গত বছর মে মাসে ওই খবর পৌঁছয় আখুর কাছে। গান গেয়ে টাকা জোগাড়ে নামেন তিনি। পাশাপাশি আবাসিক ৬৫টি শিশুকে গান শেখানোর কাজও নেন তিনি। জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় ডক্টরেট আখু কবি, গীতিকার ও গায়ক। তাঁর গানের দলের নাম ‘ইম্ফল টকিস’। ২০১৩ সালে বিশ্বের ৩২টি দেশের ব্যান্ড নিয়ে ইংল্যান্ডে ‘প্লেস অফ ওয়ার অ্যান্ড আনকনভেনশন’-এ কনসার্ট হয়েছিল। তাতে সামিল ছিল আখুর ব্যান্ডও।
আখু ও শিশু আবাসের মনিকা খানগেমবাম বাচ্চাদের নিয়ে শুরু করেন রাজ্যে শান্তির বার্তাবাহী গানের অ্যালবাম ‘আ নেটিভ টাং কলড পিস’-তৈরির কাজ। গত কাল ওই অ্যালবামের চারটি গান প্রকাশ করা হয়। আখু বলেন, ‘‘মণিপুরে বিভিন্ন উপজাতির মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে। অথচ শিশু আবাসে সব উপজাতির অসহায় শিশুরা একসঙ্গে বেড়ে ওঠে। গানের মাধ্যমে শিশুরাই সেই ঐক্যের বার্তা ছড়িয়ে দেবে।’’ তিনি জানান, গানের পাশাপাশি গ্রিটিংস কার্ডও তৈরি করছে আবাসিক বাচ্চারা। তা বিক্রি করেও মেয়েটির জন্য টাকা তোলা হচ্ছে।
আখু জানান, আগামী মাসে বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে মেয়েটির অস্ত্রোপচার হবে। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গা ও বিদেশ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় মেয়েটির কথা জানিয়ে ও আবাসিক শিশুদের গান শুনিয়ে লক্ষাধিক টাকা জোগাড় করা হয়ে গিয়েছে। সব চেয়ে বেশি সাহায্য এসেছে আমেরিকা থেকে। আখু জানান, মেয়েটি ভাল হয়ে যাওয়ার পরে সকলে মিলে একটি কনসার্টের আয়োজন করা হবে।