ম্যারাথনে সামিল শিলচরের বাসিন্দারা। রবিবার স্বপন রায়ের তোলা ছবি।
স্বচ্ছতার বার্তা নিয়ে শিলচর শহরে ছড়াল উৎসবের মেজাজ। আজ সকালে সেই বার্তা ছড়াতে ম্যারাথনে অংশ নিলেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। কেউ আক্ষরিক অর্থেই ছুটলেন, কেউ পূর্ণগতিতে হাঁটলেন। পদস্থ সরকারি কর্তা থেকে স্কুলছাত্র, ব্যবসায়ী থেকে ইঞ্জিনিয়ার— সামিল ছিলেন সবাই।
স্বচ্ছ সর্বৈক্ষণ প্রতিযোগিতায় দেশের ৫০০ শহরের মধ্যে শিলচরও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। স্বচ্ছতার দিক থেকে কোন শহর কোন অবস্থানে, প্রতি মুহূর্তে মোবাইল অ্যাপে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাই তাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন কাছাড়ের জেলাশাসক এস বিশ্বনাথন ও পুরপ্রধান নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুর।
নীহারবাবুকে সঙ্গে নিয়ে আজ সকালে পতাকা নেড়ে ম্যারাথন শুরুর সঙ্কেত দেন বিশ্বনাথনই। পরে সেই পতাকা নিয়ে নিজেও ছুটতে থাকেন। শুরুতে ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থ, বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রাজদীপ রায়, জেলা সভাপতি উদয়শঙ্কর গোস্বামী প্রমুখ। নির্দল পুরসদস্য বীরব্রত রায় ও রতন সরকারকে সক্রিয় দেখা গেলেও কংগ্রেস সদস্যদের দেখা যায়নি। একমাত্র রঞ্জন রায়কে এক জায়গায় দেখা গিয়েছিল। তাও ম্যারাথনে নিজে অংশ নেননি, অংশগ্রহণকারীদের জলপানের ব্যবস্থা করেন। তিনি সেখানে মূলত তাঁর নেতৃত্বাধীন এনজিও-র প্রতিনিধিত্ব করছিলেন। শুধু কংগ্রেস পুরসদস্যরা নন, ম্যারাথনকে এড়িয়ে গিয়েছেন তাদের সব স্তরের নেতাকর্মীরা। অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদেরও তেমন ভাবে দেখা যায়নি।
তবু উপস্থিতি মন্দ ছিল না। জেলাশাসক নিজে উৎসাহী হওয়ায় শহরের সরকারি কর্মীদের অনেকে নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হন। বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নিজেদের ব্যানার নিয়ে সামিল হয়। মহিলাদের সংখ্যাও কম নয়। সকাল পৌনো ৮টায় ক্যাপিটেল পয়েন্ট থেকে ম্যারাথনের সূচনা হয়। রাঙ্গিরখাড়ির দিকে তা যত এগিয়েছে, উপস্থিতির মাত্রা তত বেড়েছে। বিশ্বনাথন বলেন, ‘‘এটি এক গৌরবের মুহূর্ত। স্বচ্ছতার বার্তা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে শীতের সকালে কয়েক হাজার মানুষ সামিল হয়েছেন।’’ এর একটা প্রভাব পড়বেই বলে তিনি আশাবাদী। তাঁর কথায়, ‘‘শেষ পর্যন্ত প্রতিযোগিতায় কত নম্বরে থাকল শিলচর, তা বড় কথা নয়। একে সামনে রেখে স্বচ্ছতার যে পরিবেশ গড়ে উঠছে, তাতে শহরের বিরাট লাভ হচ্ছে।’’ স্বচ্ছতা নিয়ে এই মানসিকতাকে ধরে রাখার আহ্বান জানান প্রাক্তন মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থ।