নির্বাচনী সভায় প্ররোচনামূলক বক্তৃতা দেওয়ার অভিযোগে আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল নির্বাচন কমিশন। রবিবার নিজের ছোট ছেলে তেজস্বী যাদবের নির্বাচনী কেন্দ্র রাঘোপুরের জনসভায় তিনি জাতপাতের প্রসঙ্গ তুলে প্ররোচনামূলক ভাষণ দেন বলে অভিযোগ। গতকালই মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার নসীম জৈদীর কাছে লালু প্রসাদের বিরুদ্ধে জাতপাতের রাজনীতির করার অভিযোগ উঠেছিল। সে সময়ে মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার গোটা বিষয়টি দেখার জন্য রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিককে নির্দেশ দেন। মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক বৈশালীর জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট চেয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেন। আজ বৈশালী জেলা প্রশাসন লালু প্রসাদের সভার ভিডিও দেখার পরে এফআইআর করেছে। নির্বাচন আধিকারিকের কাছে রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে।
রাঘোপুরের জনসভায় লালু বলেছিলেন, ‘‘এ বার ব্যাকওয়ার্ডের সঙ্গে ফরোয়ার্ডের লড়াই। জিততে হবে।’’ তার পরেও জেলা প্রশাসন বা রাজ্য নির্বাচন আধিকারিক কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সাংবাদিকেরা মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সামনে বিষয়টি তুলে ধরেন। তখনই লালুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নির্বাচনী বিধি ভাঙায় রাজ্যের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেতা সুশীলকুমার মোদীর বিরুদ্ধেও এফআইআর করেছে কৈমুর জেলা প্রশাসন। কাল কৈমুরের জগজীবন স্টেডিয়ামে টিভি, ল্যাপটপের লোভ দেখিয়েছেন বলে অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। এ বারের বিহার ভোটে এই প্রথম কোনও নেতার বিরুদ্ধে বিধি ভাঙার অভিযোগ দায়ের করল প্রশাসন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৭৭-ই, ১৮৮ ধারা এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৩-এ ধারায় মামলা করা হয়েছে। কমিশনের ভিডিও নজরদারি টিমের কাছে সভার সিডি পৌঁছনোর পরেই এফআইআর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সুশীল অবশ্য প্রলোভন দেখানোর অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিশ্রুতি দেওয়া এবং ভোটারদের প্রলোভন দেখানোর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আমি শুধু নির্বাচনী ইস্তাহারের কথা বলেছিলাম।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় বিজেপি প্রার্থী মন্টু পাণ্ডে কাল মনোনয়ন জমা দেন। তার পরে স্থানীয় স্টেডিয়ামে সভা হয়। সেই সভাতেই ছিলেন সুশীল। রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে প্রতিটি দলিত এবং মহাদলিত পরিবারকে রঙিন টিভি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। আরও বলেন, ‘‘বিজেপি ক্ষমতায় এলে প্রত্যেক গরিব পরিবারে দু’জোড়া করে ধুতি ও শাড়ির টাকা দেওয়া হবে।’’ রাজ্যের ৫০ হাজার পড়ুয়াকে ল্যাপটপ দেওয়ার ঘোষণাও করেন সুশীল।
বিহারের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের আজ কড়া নিন্দা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লিতে সাংবাদিকদের সামনে বিহার বিজেপির এই নেতার প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেন, ‘‘গরিব মানুষকে খাবার দিতে হবে। তার বদলে নেতারা টিভি, রেডিওর প্রলোভন দেখাচ্ছেন! এটা ঠিক নয়। গণতন্ত্র রক্ষা করতে নির্বাচন কমিশন কড়া ব্যবস্থা নিক।’’