ফাইল চিত্র ।
দু’বছর আগে অর্থাৎ ২০২০-তেও শরীরে একাধিক আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শ্রদ্ধা! এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল তদন্ত চলাকালীন। সূত্রের খবর, ২০২০-র ৩ ডিসেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে শ্রদ্ধা মুম্বইয়ের ভাসাইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন৷ শ্রদ্ধার হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময়ের একটি ছবিও সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে, শ্রদ্ধার নাকে এবং গালে আঘাতের চিহ্ন। তখনও শ্রদ্ধা এবং অভিযুক্ত আফতাব দিল্লিতে আসেননি। মুম্বইয়েই থাকতেন এই যুগল।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পিঠে এবং অভ্যন্তরীণ একাধিক আঘাত নিয়ে শ্রদ্ধা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর সেই আঘাত গার্হস্থ্য হিংসার কারণে হয়েছিল বলেও হাসপাতাল সূত্রে খবর।
ভাসাইয়ের ওই হাসপাতালের চিকিৎসক শিবপ্রসাদ শিন্ডে সেই সময় শ্রদ্ধার চিকিৎসা করেছিলেন বলে দাবি করেছেন। এক সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “শ্রদ্ধার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর শরীরে বাহ্যিক আঘাত কম থাকলেও শরীরের ভিতরে আঘাত ছিল। কিন্তু এক বার চিকিৎসা করিয়ে যাওয়ার পর তিনি আর চিকিৎসা করাতে আসেননি।’’
শ্রদ্ধার হাসপাতালের ওই রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে যে, শ্রদ্ধার তীব্র পিঠে ব্যথা, বমি বমি ভাব, ঘাড়ের ব্যথা এবং ঘাড় নড়াচড়ায় অসুবিধা ছিল।
দু’বছর আগে শ্রদ্ধার হাসপাতালে ভর্তির তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি মুম্বইয়ে থাকাকালীনও তাঁকে মারধর করেন তাঁর প্রেমিক আফতাব?
শ্রদ্ধার বন্ধুরা এমনিতেই অভিযোগ এনেছেন যে, দিল্লির বাড়িতে শ্রদ্ধাকে প্রায়ই মারধর করতেন আফতাব। শ্রদ্ধার চিৎকার নাকি পৌঁছেছিল প্রতিবেশীদের কানেও।
প্রসঙ্গত, ৩ বছর আগে একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে দেখা হয়েছিল শ্রদ্ধা ওয়ালকর এবং তাঁর প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালার। প্রথমে মুম্বইয়ে থাকলেও পেশায় কল সেন্টার কর্মী শ্রদ্ধা পরে আফতাবের সঙ্গে দিল্লিতে চলে আসেন। সেখানে তাঁরা মেহরৌলীর একটি ভাড়া বাড়িতে একত্রবাসে থাকতে শুরু করেন।
গত ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলীতে একত্রবাসে থাকা শ্রদ্ধাকে খুন করার অভিযোগ রয়েছে প্রেমিক আফতাবের বিরুদ্ধে। এর পর নাকি আমেরিকার এক ওয়েব সিরিজ় থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রদ্ধার মৃতদেহ ৩৫ টুকরো করে ফেলেন আফতাব। সেই মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখা হয় নতুন ফ্রিজে। এর পর ১৮ দিন ধরে কাছের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসেন অভিযুক্ত আফতাব।
শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত নামার পর দিল্লি পুলিশ গত শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করে। তার পর থেকেই অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রমাণ খুঁজে বার করতেও তৎপর হয়েছে পুলিশ।