Shraddha Walker murder case

শ্রদ্ধার দেহের টুকরো ফয়েল খুলে খুলে কেন জঙ্গলে ছোড়ে আফতাব? পাকা মাথা দেখছে পুলিশ

সন্ধে থেকেই শুরু হত নৈশ অভিযানের প্রস্তুতি। রাত গড়ালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ত আফতাব। তার পর কী হত? তদন্তে নেমে একের পর এক তথ্য উঠে আসছে পুলিশের হাতে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২২ ১৪:২১
Share:

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

রোজ সন্ধে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে ফ্ল্যাটে ফিরে আসতেন আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। মৃত বান্ধবীর দেহের একটি টুকরো থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হত তখন থেকেই। শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রতিদিন সন্ধে থেকেই রাত দু’টোর নৈশ অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করে দিতেন আফতাব।

Advertisement

কী ভাবে চলত সেই প্রস্তুতি, পুলিশ সূত্রে খবর দিল্লির কোন নির্জন এলাকায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরো ফেলা হবে, প্রথমে তা ঠিক করতেন আফতাব। তার পর ফ্রিজ থেকে শ্রদ্ধার দেহের একটি টুকরো মুড়ে ফেলতেন পরিষ্কার কালো রঙের ফয়েলে। রাত গড়ালে সেই ফয়েলের মোড়ক হাতে নিয়েই আফতাব রওনা হতেন আগে থেকে ঠিক করে নেওয়া গন্তব্যের উদ্দেশে। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, গোটা ব্যাপারটিকে যাতে স্বাভাবিক মনে হয় তার জন্য চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখতেন না দক্ষিণ দিল্লির ২৮ বছরের ওই তরুণ।

পুলিশ সূত্রে খবর, আফতাব কালো ফয়েলের প্যাকেটে মোড়া শ্রদ্ধার দেহের টুকরো নিয়ে হাজির হতেন কোনও কোনও জঙ্গল এলাকায়। সেখানেই ছুড়ে ফেলতেন মাংসের টুকরো। তবে ফয়েলে মোড়া অবস্থায় নয়।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ফয়েল থেকে মাংসের টুকরো হাতে করে বের করে তা জঙ্গলে ছুড়ে ফেলতেন আফতাব। যাতে মনে হয় পশুরা ওই মাংস ছিঁড়ে খেয়েছে।

একটি ডেটিং সাইটের মাধ্যমে শ্রদ্ধা ও আফতাবের আলাপ হয়েছিল। পরে সেই আলাপ প্রেমে গড়ায়। প্রেমিককে নিয়ে একসঙ্গে থাকবেন বলে ঘর ছেড়েছিলেন শ্রদ্ধা। ভিন্‌‌ ধর্মের ছেলের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক তৈরি হোক, প্রথম থেকেই চাননি শ্রদ্ধার বাবা-মা। কিন্তু, প্রেমের টানে বাবা-মার আপত্তিকে অগ্রাহ্য করেই ঘর ছেড়েছিলেন শ্রদ্ধা। যাঁর জন্য ঘর ছেড়েছিলেন শ্রদ্ধা, সেই প্রেমিকের হাতেই খুন হতে হল তাঁকে।

গত ১০ নভেম্বর মেয়ের হদিস না পেয়ে মুম্বই পুলিশে এফআইআর দায়ের করেছিলেন শ্রদ্ধার বাবা। প্রেমিকের সঙ্গে শ্রদ্ধা থাকতেন দিল্লিতে। তাই ওই অভিযোগ দিল্লি পুলিশকে জানানো হয়। এর পরই আফতাবকে পাকড়াও করা হয়। জেরা চলাকালীন খুনের কথা স্বীকার করেন আফতাব। বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন শ্রদ্ধা। এ নিয়ে অশান্তির জেরেই তাঁকে খুন করেছেন বলে দাবি করেছেন আফতাব। তদন্তে নেমে পুলিশ এ-ও জানতে পারে যে, শ্রদ্ধাকে খুনের পর তাঁর দেহ কেটে ৩৫টি টুকরো করা হয়। তার পর সেগুলি বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো হয়েছে।

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে দেশ জুড়ে। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, মহারাষ্ট্রের পালঘর নিবাসী শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ মঙ্গলবার খুনের নেপথ্যে ‘লভ জিহাদ’-এর তত্ত্ব রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আমার সন্দেহ লভ জিহাদ হয়ে থাকতে পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement