অরবিন্দ সাওয়ন্ত। শিবসেনা সাংসদ।
লোকসভার লবিতে দাঁড়িয়েই জেলে ভরার শাসানি এবং ফোনে অ্যাসিড হামলার হুমকি। শিবসেনা সাংসদ অরবিন্দ সাওয়ন্ত এবং তাঁর দলের বিরুদ্ধে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন অমরাবতীর নির্দল সাংসদ নবনীত কউর রানা। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে অভিযোগ পেশ করে তিনি দাবি করেছেন, তাঁকে ফোনে অ্যাসিড হামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। শিবসেনার লেটারহেডেও তাঁর কাছে লিখিত হুমকি পৌঁছেছে। অরবিন্দ অবশ্য অভিযোগ নস্যাৎ করে দাবি করেছেন, এ সবই ডাহা মিথ্যা।
২২ মার্চ স্পিকারকে চিঠি লিখেছেন নবনীত। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘আজ যে ভাবে শিবসেনা সাংসদ অরবিন্দ সাওয়ন্ত আমাকে শাসিয়েছেন, সেটা শুধু আমি না, দেশের সব মহিলারই অপমান। আমি ওঁর বিরুদ্ধে কঠোরতম পুলিশি পদক্ষেপ চাইছি।’’ নবনীতের দাবি, লোকসভার লবিতেই অরবিন্দ তাঁকে বলেছেন, ‘‘আপনি কী করে মহারাষ্ট্রে ঘুরে বেড়ান, দেখব। জেলে ভরে তবে ছাড়ব।’’ নবনীতের কথায়, ‘‘কথাটা শুনে এক মুহূর্তের জন্য আমার দৃষ্টি শূন্য হয়ে গিয়েছিল। তার পরেই আমি পিছন ফিরে আমার এক সহকর্মীকে দেখতে পাই। জিজ্ঞেস করি, আপনি শুনলেন? উনি বললেন, হ্যাঁ শুনেছি।’’ রাজামুন্দ্রির সাংসদ ভরত মারগনি এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, দাবি নবনীতের। লোকসভা মহারাষ্ট্র সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলার জন্যই তাঁকে এ ভাবে শাসানো হচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ।
নবনীত যোগ করেন, এর আগেও উদ্ধব ঠাকরে সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলে মুখে অ্যাসিড ছোড়া হবে বলে তাঁকে শাসানো হয়েছে। শিবসেনার নাম করেই ফোনে এবং চিঠি পাঠিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘‘ওই সুন্দর মুখের গর্ব আর থাকবে না!’’ পুলিশ এবং স্পিকার, উভয়কেই তিনি সে সব জানিয়ে রেখেছেন বলে দাবি করছেন নবনীত। লোকসভায় মুম্বই পুলিশের অফিসার সচিন ওয়াজ়ের গ্রেফতার, ব্যবসায়ী মনসুখ হিরনের মৃত্যু এবং পরমবীর সিংহের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের ঘটনায় উদ্ধব সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছেন নবনীত।
আত্মপক্ষ সমর্থনে একটি ভিডিয়ো বার্তা দিয়েছেন অরবিন্দও। তাঁর বক্তব্য, তিনি কাউকেই কোনও দিন শাসাননি, মহিলা তো দূর! তাঁর কথায়, ‘‘কিছু কিছু লোক কথা ঘোরাতে দড় আর তা থেকে প্রচার পেতেও ওস্তাদ।’’ অ্যাসিড হানার হুমকির সত্যতা যদি প্রমাণিত হয়, তিনি নবনীতের পাশেই দাঁড়াবেন, এমনও দাবি অরবিন্দের। সেই সঙ্গে নবনীতের বিরুদ্ধে তাঁর পাল্টা অভিযোগ, সংসদে বাইরের কারও নাম নেওয়া বেআইনি। কিন্তু নবনীত দিনের পর দিন সেটাই করে যাচ্ছেন এবং সে সব রেকর্ডও হয়ে চলেছে। অরবিন্দের দাবি, অমরাবতীর পরাজিত শিবসেনা প্রার্থী আনন্দরাও আদসু সম্প্রতি নবনীতের জাতি-শংসাপত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে একটি মামলা করেছেন। সেই থেকেই নবনীত শিবসেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছেন। উদ্ধবের বিরুদ্ধে কথা বলার সময় নবনীতের ‘আগ্রাসী শরীরী ভাষা’র কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। নবনীত জবাবে বলেছেন, ‘‘আমি কী বলব আর আমার শরীরী ভাষা কেমন হবে, তা নিয়ে শিবসেনা বা অরবিন্দের হুকুম শুনতে চাই না।’’