ধর্নামঞ্চে চন্দ্রবাবু নায়ডুর সঙ্গে রাহুল গাঁধী। সোমবার নয়াদিল্লিতে। এপি
লখনউয়ে ছিল দলের বিরাট কর্মসূচি। তার আগেই সকালে সময় বের করে অন্ধ্রভবনে অনশনরত চন্দ্রবাবু নায়ডুর পাশে দাঁড়ালেন রাহুল গাঁধী। বিরোধী মঞ্চ থেকে তোপ দাগলেন নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর সরকারকে নিশানা করে। কংগ্রেস সভাপতির অভিযোগ, অন্ধ্রের মানুষের টাকা চুরি করে অনিল অম্বানীদের দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শুধু রাহুলই নন। ব্রিগেড পরবর্তী বিরোধী সমাবেশের অধ্যায়টি রচিত হল আজ নয়াদিল্লির অন্ধ্রভবনে। কয়েক হাজার মানুষ চন্দ্রবাবুর ছবি আঁকা হলুদ (দলের রঙ) টি শার্ট, পাঞ্জাবি পরে। হলুদ শাড়ি পরা মেয়েরা মোদীকে হটানোর স্লোগান দিয়েছেন দিনভর। আর বিরাট সমাবেশে দফায় দফায় এসেছেন কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, আপ, তৃণমূল, ডিএমকে, ন্যাশনাল কনফারেন্স এমনকি বিজেপি-শরিক শিবসেনাও! শিবসেনার সাংসদ সঞ্জয় রাউতের বিরোধী সমাবেশে যোগ দেওয়া প্রবল অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে বিজেপিকে।
সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা— বারো ঘণ্টার ধর্নামঞ্চে বিরোধী নেতাদের মধ্যে প্রথমেই পৌঁছন রাহুল। বলেন, ‘‘অন্ধ্রের মানুষের টাকা চুরি করে অনিল অম্বানীদের দিয়েছেন মোদী। উনি যেখানেই যান মিথ্যে বলেন। অন্ধ্রে গিয়ে সেখানকার বিশেষ মর্যাদা নিয়ে মিথ্যা বলেছেন। উত্তর-পূর্বে গিয়ে আবার অন্য মিথ্যা। মহারাষ্ট্রে গিয়ে অন্য। মোদীর কোনও বিশ্বাসযোগ্যতাই নেই।’’ অন্ধ্র ভবন থেকেই রাহুল রওনা দেন লখনউয়ে। এর পরে কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা, আহমেদ পটেল,
কমল নাথ, জয়রাম রমেশ এমনকি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও পৌঁছে যান ধর্নায়। বক্তৃতাও দেন মনমোহন। বলেছেন, ‘‘চন্দ্রবাবুর দল যখনই অন্ধ্রের বিশেষ মর্যাদা নিয়ে সংসদে দাবি তুলেছে, সব দলই তাকে সমর্থন করেছে। আমি এই প্রশ্নে চন্দ্রবাবুর পাশে রয়েছি।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সংসদ থেকে সোজা চন্দ্রবাবুর মঞ্চে আসেন তৃণমূলের ডেরেক ও ’ব্রায়েন। তিনি বলেন, ‘‘গত কাল বিজয়ওয়াড়াতে চন্দ্রবাবু এমন ভাষাতেই কথা বলেছেন, যেটা প্রধানমন্ত্রী বোঝেন। মোদী কাঁচের ঘরে বসে ঢিল ছুড়ছেন।’’ তৃণমূল সাংসদের কথায়, ‘‘মোদী কোনও সঙ্গী নেই। তাঁর একটাই শরিক— সিবিআই! আমরা সিবিআই, ইডি-কে ভয় পাই না।’’
বিকেলে অরবিন্দ কেজরীবাল ধর্নামঞ্চে যোগ দেন। তাঁর অভিযোগ, বিরোধীরা যেখানে ক্ষমতায় রয়েছে, বেছে বেছে তাদেরই হেনস্থা করা হচ্ছে। কেজরী বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে মোদী ভারতের নয়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী!’’ চন্দ্রবাবুকে পাশে রেখে মোদী বিরোধিতায় সরব মুলায়ম সিংহ, শরদ যাদব, ত্রিরুচি শিবা, ফারুক আবদুল্লারাও। এ দিনই চন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘জগন রেড্ডি যদি দু-একটা আসন জিতে আমাদের সঙ্গে আসতে চান, অসুবিধা কোথায়?’’ তবে তাঁর অভিযোগ, জগন মোদীকেই সাহায্য করছেন। রাতে দেবগৌড়ার হাতে জল খেয়ে অনশন তুলে নেন চন্দ্রবাবু।