প্রতীকী ছবি।
মাংস-রাজনীতির ধাক্কা উত্তরপ্রদেশ থেকে ছড়িয়ে পড়ল বিজেপি শাসিত আর এক রাজ্য হরিয়ানার গুরুগ্রামে। লখনউয়ে বিখ্যাত টুন্ডে কাবাবির দোকানে বন্ধ হয়েছে মোষের মাংসের কাবাব, আর গুরুগ্রামে এ দিন শিবসৈনিকদের হুমকিতে কেএফসি-সহ পাঁচশেটি মাংসের দোকানের ঝাঁপ পড়েছে। মাংস-রাজনীতির দখল নিতে বিজেপি শিবসেনার মরিয়া প্রতিযোগিতায় চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এমনকী লখনউ ছাপিয়ে বিজেপি শাসিত অন্তত পাঁচটি রাজ্যে কসাইখানা বন্ধের অভিযান শুরু হয়ে গিয়েছে। মাংস রফতানির বাজারে এর বিরাট নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পুরনো গুরুগ্রামের মাংস ব্যবসায়ীদের কাছে গত কালই পৌঁছে গিয়েছিল শিবসেনার হুমকি-চিঠি। তাতে বলা হয়, নবরাত্রির নয় দিন দোকান খোলা রাখা যাবে না। শুধু তা-ই নয়, প্রতি মঙ্গলবার দোকান বন্ধ রাখার জন্যও নির্দেশ দেয় শিবসেনা। আর আজ প্রায় দু’শো জন শিবসৈনিক গুরুগ্রামের মাংস ও আমিষ খাবারের পাঁচশোটি দোকান বন্ধ করে দেয়। পুলিশের দাবি, পরে দোকানগুলি খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাধা ঘুচল জিএসটির
যোগী আদিত্যনাথের সরকার কসাইখানা বন্ধে আদাজল খেয়ে নেমে পড়ায় বিজেপি শাসিত অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা চাপে পড়ে গিয়েছেন। যোগী সরকারের দাবি, রাজ্যে শুধুমাত্র অবৈধ কসাইখানাগুলিই বন্ধ করতে চাইছেন তারা। কিন্তু মাংস ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অবৈধ কসাইখানা বন্ধের নামে রাজ্যে মাংস বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ করার কাজ চলছে। উত্তরপ্রদেশের মাংস ব্যবসায়ীরা যখন অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘটে নেমেছেন, তখন বিজেপি-শাসিত রাজ্য ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশও অবৈধ কসাইখানা নিয়ে একই পথে এগোচ্ছে। জয়পুর, রায়পুর, ইন্দোরে কসাইখানা বন্ধের অভিযানের খবর সামনে এসেছে। গত পরশু ঝাড়খণ্ড সরকার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের অবৈধ কসাইখানাগুলি বন্ধের জন্য নোটিস জারি করেছে। এমনকী, পাশের রাজ্য বিহারেও জারি হয়েছে অবৈধ কসাইখানা বন্ধের নির্দেশ। বিহারে গো-রক্ষা নিয়ে বিজেপি যাতে কোনও রকম রাজনীতি করার সুযোগ না পায়, সে জন্য আগেভাগেই পদক্ষেপ করে রেখেছেন নীতীশ কুমার! তবে বিজেপি-শাসিত অসম, অরুণাচল, মণিপুরে গো-হত্যার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি। খ্রিস্টান অধ্যুষিত নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মেঘালয়ের মতো রাজ্যে গো-হত্যা বন্ধের দাবিও তুলছে না বিজেপি।
বিরোধীদের অভিযোগ, কসাইখানা বন্ধের ধাক্কা রফতানি ক্ষেত্রে জোরালো ভাবে পড়তে চলেছে।