ফাইল চিত্র।
সংরক্ষণ নিয়ে অশান্তির ধাক্কা কাটিয়ে দেরিতে হলেও ছন্দে ফিরছে মহারাষ্ট্র। এর মধ্যেই সংরক্ষণকে কেন্দ্র করে মহারাষ্ট্রে হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্র আর্থিক ভিত্তিতে সংরক্ষণ দেওয়ার ভাবনা শুরু করল। এই নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের শীর্ষ মন্ত্রীদের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু ভোটের আগে সংরক্ষণের বর্তমান ব্যবস্থাকে বদলানোর চেষ্টা করলে তার কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে কি না, সেই আশঙ্কা রয়েছে সরকারের অন্দরে।
সরকারের এক শীর্ষ মন্ত্রী আজ জানান, ‘‘সব জাতির মধ্যে আর্থিক দিক থেকে যাঁরা পিছিয়ে, তাঁদের সংরক্ষণ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে এটি একেবারেই প্রাথমিক স্তরের আলোচনা। যদি সরকার এই বিষয়টি নিয়ে এগোনোর সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে সমস্ত স্তরে আলোচনা করা হবে।’’ চার দিক থেকে সংরক্ষণের যে দাবি উঠছে, তার ভিত্তিতেই এমন একটি ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে সরকারের মধ্যে। গেরুয়া শিবিরের সংগঠন হিন্দু মহাসভাও সম্প্রতি আর্থিক ভিত্তিতে সংরক্ষণের দাবি তুলেছে। কিন্তু সংরক্ষণের সীমারেখা ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট বেঁধে দিয়েছে। সেখানে ব্যাঘাত ঘটালে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কেন্দ্রের।
তবে মোদী সরকার যা-ই ভাবুক না কেন, মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি নিয়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস সরকারকে তুলোধনা করেছে শরিক শিবসেনা। গত কালই আন্দোলনের সমর্থনে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন শিবসেনা ও এনসিপি-র দুই বিধায়ক। এ দিন বিধানসভার স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্রও জমা দিয়েছেন শিবসেনার হর্ষবর্ধন যাদব ও এনসিপির বাসুদেব পাতিল চিকাতগাওকর।
এ দিন শিবসেনার দলীয় মুখপাত্র ‘সামনা’র সম্পাদকীয়তে মহারাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসকেই দায়ী করে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী সমস্যার সমাধান না করে সমস্যাটাকেই চেপে রাখতে চাইছেন। গত কাল মুখ্যমন্ত্রীর তরফে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আশ্বাস পাওয়ার পরে বন্ধ তুলে নেওয়ার কথাও জানায় মরাঠা ক্রান্তি মোর্চা। আজ শিবসেনার বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী দশ দিন আগে যদি এটা করতেন, তবে হয়তো হিংসার পরিস্থিতি আগেই সামলানো যেত।
প্রশাসনের দাবি, দেরিতে হলেও ছন্দে ফিরছে মহারাষ্ট্র। এ দিন নবী মুম্বইয়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে সাড়ে চারশো আন্দোলনকারীকে আটক করা হয়েছে। বন্ধ তুললেও নিজেদের দাবি থেকে এখনই পিছু হটছেন না আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনে প্রথম থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছে মরাঠা ক্রান্তি মোর্চা (এমকেএম) এবং সকল মরাঠা সমাজ নামে দু’টি সংগঠন। এ দিনও নাশিকে জেলাশাসকের দফতরের সামনে অনশন করেন এমকেএম সমর্থকেরা। সর্বভারতীয় কিসান সভা এই বিক্ষোভ কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়েছে।