সিনজো আবে
দশাশ্বমেধ ঘাটের সামনে বানানো হয়েছে মঞ্চ। ইলাহাবাদ হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে বসানো হয়েছে সাউন্ড সিস্টেম। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সিনজো আবেকে নিয়ে আগামিকাল সন্ধ্যায় সেখানেই আরতি দেখবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বারাণসী–কিয়োটোর মধ্যে যৌথ অংশীদারী চুক্তির প্রেক্ষাপটে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে কেন্দ্র। গঙ্গার ধারে দুই সুপ্রাচীন সভ্যতার মিলনকে কূটনৈতিক চেহারা দিলেও, নয়াদিল্লি কিন্তু আবের সফরে সব চেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে জাপানের সঙ্গে অসামরিক পরমাণু চুক্তিকেই। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, এই সফরে চুক্তি সই না হলেও, দর কষাকষির পর্বটি শেষ করা যাবে। বারাণসী সফরের আগে মোদী এবং আবে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও বসবেন।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর গত বছর অগস্টে জাপান সফরে গিয়েছিলেন মোদী। এক মাসে মোদীর সঙ্গে তিন দফা বৈঠক হয়েছে আবের। প্যারিস, ইস্তানবুল ও কুয়ালা লামপুরে আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলিতেও তাঁরা বৈঠক সেরেছেন। ভারতে বুলেট ট্রেন চালানোর জন্য টোকিওর ৯৮ হাজার কোটি টাকার বিদেশি লগ্নিকে কালই ছাড়পত্র দিয়েছে নয়াদিল্লি।
তবে পরমাণু চুক্তির বিষয়টিই সর্বাধিক গুরুত্ব পেতে চলেছে আবের সফরে। শক্তি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ আনতে যথেষ্ট উদগ্রীব মোদী সরকার। তবে জাপানের ক্ষেত্রে সমস্যা ছিল যে পরমাণু প্রশ্নে তারা বিশ্বের সব চেয়ে স্পর্শকাতর দেশ। ভারত আবার পরমাণু প্রসার-রোধ চুক্তি (এনপিটি)–তেও সই করেনি। ফলে জাপানের সঙ্গে চুক্তি করার প্রক্রিয়াটি আদৌ সহজ নয়। টোকিও চাইছিল পরমাণু পরীক্ষার প্রশ্নে চুক্তিতে একটি বিশেষ অনুচ্ছেদ থাকুক। সেটি হল— ভারত পরমাণু পরীক্ষা করলে তৎক্ষণাৎ ওই চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে। ঘটনা হল ২০০৮ সালে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরে ভারত একতরফা ভাবেই পরমাণু পরীক্ষার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এখনও তার অন্যথা হয়নি। জাপানের দ্বিতীয় শর্ত, এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি প্রতিশ্রুতি হিসাবে চুক্তিতে রাখতে হবে। ভারত তাতে রাজি না-হওয়ায় বছর খানেক ধরে দর কষাকষি চলেছে। শেষ পর্যন্ত নয়াদিল্লির অবস্থান মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে জাপান।