(বাঁ দিকে) শিন্ডেসেনা নেতার পুত্র মিহির শাহ। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
পুত্রের দোষ গাড়ির চালকের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করেছিলেন মহারাষ্ট্রের শিবসেনা (একনাথ শিন্ডে গোষ্ঠী) নেতা রাজেশ শাহ, মুম্বইয়ের বিএমডব্লিউকাণ্ডে আদালতে এমনটাই দাবি করল পুলিশ। তারা জানিয়েছে, পুত্রকে বাঁচাতে একাধিক পরামর্শ দিয়েছিলেন রাজেশ। দুর্ঘটনার খবর শোনার পর থেকে একাধিক বার ফোন করেছিলেন পুত্রকে। বুদ্ধি দিয়েছিলেন, পাশের আসনে বসে থাকা চালকের সঙ্গে তাঁকে দ্রুত জায়গা বদল করে নিতে হবে। তা হলেই মনে হবে, আসল দোষী চালক। এই ঘটনায় অনেকে পুুণের পোর্শেকাণ্ডের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন। সেখানেও দুর্ঘটনার পর চালকের সঙ্গে তড়িঘড়ি আসন বদলে নিয়েছিলেন নাবালক।
পুলিশের চোখে ধুলো দিতে এমন আরও অনেক বুদ্ধিই পুত্রকে দিয়েছিলেন রাজেশ, আদালতে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। রাজেশের পুত্র মিহির শাহ এখনও পলাতক। অভিযোগ, দুর্ঘটনার সময়ে বিএমডব্লিউর স্টিয়ারিংয়ে ছিলেন তিনিই। তাঁর গাড়ি রবিবার ভোরে মুম্বইয়ের ওরলি এলাকায় এক দম্পতির স্কুটিতে ধাক্কা মারে। ৪৫ বছরের মহিলার মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। তাঁর স্বামী গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় রাজেশ এবং ওই গাড়ির চালক রাজরিশি বিদাওয়াতকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ঘাতক গাড়িটি রাজেশের নামেই নথিভুক্ত রয়েছে। সোমবার রাজেশ ১৫ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেয়েছেন।
আদালতে পুলিশ জানিয়েছে, স্কুটিতে ধাক্কা মারার পর প্রথমেই বাবাকে ফোন করেছিলেন মিহির। বিশদে জানিয়েছিলেন গোটা ঘটনা। এর পর রাজেশই তাঁকে পরামর্শ দেন, পাশের আসনে বসে থাকা চালকের সঙ্গে দ্রুত জায়গা বদল করে নিতে। চালকের ঘাড়েই সমস্ত দোষ তিনি চাপাতে চেয়েছিলেন।
ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে মিহির প্রথমে তাঁর প্রেমিকার বাড়িতে গিয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তার পর সেখান থেকেও পালিয়ে যান। এ বিষয়ে প্রেমিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা। তিনি মিহিরকে পালাতে সাহায্য করেছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দলের বর্ষীয়ান নেতার পুত্রের কাণ্ডে অস্বস্তিতে পড়েছে মহারাষ্ট্রের শাসকদল। মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে জানিয়ে দিয়েছেন, যাঁরা দোষী, তাঁদের কাউকে রেয়াত করা হবে না। ক্ষমতাশালী হলেও কেউ ছাড় পাবেন না। তবে সোমবারই রাজেশ জামিন পেয়ে যাওয়ায় বিতর্ক আরও বেড়েছে।