মহারাষ্ট্রের শিন্ডেসেনা নেতার পুত্র মিহির শাহ। ছবি: সংগৃহীত।
মুম্বইয়ে বিএমডব্লিউকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত শিবসেনা (একনাথ শিন্ডে গোষ্ঠী) নেতার পুত্র মিহির শাহকে এখনও খুঁজে পায়নি পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, মিহির দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন। তার পরেই বাবার ব্যবসায় হাত লাগান। ঘটনার দিন স্কুটিতে ধাক্কা মারার পর বিএমডব্লিউ থেকে শিবসেনা দলের নাম খুঁটে তুলেছিলেন মিহির।
রবিবার ভোরবেলা মুম্বইয়ের ওরলিতে একটি বিএমডব্লিউ ধাক্কা মারে স্কুটিতে। ৪৫ বছরের এক মহিলার মৃত্যু হয়। তাঁর স্বামী গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কয়েক মাস আগে পুণেতে পোর্শেকাণ্ডের পর এই ঘটনা নতুন করে চর্চায় উঠে এসেছে। অভিযোগ, ঘাতক গাড়িটি শিন্ডেসেনা নেতা রাজেশ শাহের। দুর্ঘটনার সময়ে গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে ছিলেন তাঁর পুত্র মিহির। এই ঘটনায় রবিবার রাতে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে রাজেশকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মহারাষ্ট্রের পালঘর জেলার বাসিন্দা ২৪ বছর বয়সি মিহির দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন। মহারাষ্ট্রতেই তাঁর বাবার নির্মাণের ব্যবসা রয়েছে। স্কুল ছাড়ার পর তাতে যোগ দেন মিহির। পুলিশ সূত্রে খবর, উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন করতেন অভিযুক্ত। ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ, শনিবার রাতেও তিনি জুহুর একটি বিলাসবহুল পানশালায় গিয়েছিলেন বন্ধুদের সঙ্গে। সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত ছিলেন। মনে করা হচ্ছে, গাড়ি চালানোর সময়েও তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। যদিও পানশালার মালিক পুলিশকে জানিয়েছেন, মিহির মদ খাননি।
বিএমডব্লিউয়ের চালক রাজেন্দ্র সিংহ বিজাওয়াত পানশালা থেকে গাড়ি চালিয়ে মিহিরকে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, ওরলির কাছে পৌঁছে গাড়ি চালানোর জন্য বায়না করেন মিহির। চালক তাঁর হাতে স্টিয়ারিং দিয়ে দেন। এর পরেই ঘটে দুর্ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘাতক গাড়িটিতে শিবসেনা দলের নাম লেখা স্টিকার লাগানো ছিল। স্কুটিতে ধাক্কা মারার পর প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে মিহির সেই স্টিকার খুঁটে তোলেন। যদিও সম্পূর্ণ স্টিকার তুলে ফেলা যায়নি। এ ছাড়া, গাড়িটির নম্বরপ্লেটও সরিয়ে দেন অভিযুক্ত। এর পর নম্বরপ্লেটহীন গাড়ি ফেলে পালিয়ে যান।
ঘটনাস্থল থেকে প্রথমে প্রেমিকার বাড়িতে গিয়েছিলেন মিহির। সেখান থেকেও পরে পালিয়ে যান। পুলিশ তাঁর প্রেমিকাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। গ্রেফতার করা হয়েছে গাড়ির চালককেও। ঘটনার পর থেকেই মিহিরের মোবাইল ফোন বন্ধ। তবে ফোন বন্ধ করার আগে বাবাকে ফোন করে ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। তাঁকে লুকাতে প্রেমিকা কোনও ভাবে সাহায্য করেছেন কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।