‘হান্টারওয়ালে আঙ্কল’ নামেই পরিচিত ছিলেন ব্রজেশ ঠাকুর। —ফাইল চিত্র।
সমাজের প্রভাবশালীদের যে তার যোগাযোগ রয়েছে, আন্দাজ পাওয়া গিয়েছিল আগেই। এ বার এক মন্ত্রীর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর পাওয়া গেল মুজফফরপুর ধর্ষণকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত ব্রজেশ ঠাকুরের কাছ থেকে। উদ্ধার হয়েছে আরও ৩৯ জন প্রভাবশালীর মোবাইল নম্বর।
ব্রজেশ মুজফফরপুর ধর্ষণ-কাণ্ডের সেই হান্টারওয়ালে আঙ্কল। একাধিক হোমের শিশুকন্যা এবং কিশোরীদের উপর তার ভয়াবহ অত্যাচারের খবরে রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল সারা দেশ। দিনের পর দিন, কখনও মাদক খাইয়ে, কখনও চাবুক মারার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করত হোমের আবাসিকদের। তার বিরুদ্ধে ৪২ জন নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে।
ব্রজেশ এখন মুজফফরপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি। শনিবার তার কাছ থেকেই ৪০টি মোবাইল নম্বরের তালিকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেই তালিকার একটি নম্বর আবার এক মন্ত্রীর।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের আগে ৬৭ রকমের মাদক খাওয়াতেন ‘হান্টারওয়ালে আঙ্কল’
পুলিশ জানিয়েছে, কয়েক দিন ধরেই রাজ্যের সমস্ত জেলে তল্লাশি অভিযান চলছে। সেই তল্লাশি অভিযানেই ব্রজেশের কাছ থেকে ফোন নম্বর লেখা দু’পাতার একটি কাগজ মেলে। নম্বরগুলো যাচাই করে দেখা গিয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগ সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের। আর এই তালিকায় এক মন্ত্রীর নামও রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে কোন মন্ত্রীর নাম, তা এখনও খোলসা করেনি পুলিশ।
আরও পড়ুন: এ বার মোদীর তোপে মমতা, ‘গণতন্ত্র আর জনগণে আস্থা হারিয়েছেন উনি’
বিহারের হোমের এই নারকীয় চিত্রের কথা প্রথম সামনে আসে টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেসের একটি রিপোর্টে। অত্যাচারিত মেয়েদের সঙ্গে কথা বলে তারাই প্রথম রিপোর্টটি সামনে আনে। তাতে জানা যায় সেবা সংকল্প সমিতির হোমের কথা। তার পর সামনে আসে মুজফফরপুরের যৌনপল্লীর কাছে চতুর্ভূজ স্থান নামে আরও একটি হোমের কথা।
এই দু’টি হোমের মেয়েদের উপর নির্মম অত্যাচার চালাত ব্রজেশ। এমনকি আবাসিকদের যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হত। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছিল হোমের ভিতরে তৈরি অস্থায়ী অপারেশন থিয়েটারের কথাও। ধর্ষণের পাশাপাশি মহিলাদের গর্ভপাত করানো হত এখানেই। সে সময় তদন্তে জানা গিয়েছিল, সমাজের উপরতলার মানুষ ব্রজেশের স্বচ্ছন্দ চলাফেরা ছিল রাজনৈতিক জগতের উচ্চ মহলে। এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল বিহারের শাসকদলের একাধিক নেতারও।