এই পোস্টারই লাগানো হয়েছে এনসিপির দিল্লি কার্যালয়ের বাইরে। ছবি: সংগৃহীত।
কাকা শরদ পাওয়ার ‘বাহুবলী’, ভাইপো অজিত ‘কাটাপ্পা’! সেই মর্মেই ‘গদ্দার’ (বিশ্বাসঘাতক) লেখা পোস্টার পড়ল এনসিপির দিল্লি দফতরের বাইরে। কাকার বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করে মহারাষ্ট্রের শিন্ডেসেনা-বিজেপি জোট সরকারের মন্ত্রিপদে শপথ গ্রহণের পর সেই পোস্টারে অজিতকেই ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এনসিপির ছাত্র শাখা রাষ্ট্রবাদী বিদ্যার্থী কংগ্রেসের তরফে এই পোস্টার লাগানো হয়েছে।
ইতিমধ্যেই এনসিপির দলগত দ্বন্দ্ব নির্বাচন কমিশনের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে। এনসিপি নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক ‘ঘড়ি’ চেয়ে বুধবার দুপুরেই নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে অজিত শিবির। তার মধ্যেই প্রকাশ্যে এল এই পোস্টার। রাষ্ট্রবাদী বিদ্যার্থী কংগ্রেসের এই পোস্টারে ‘বাহুবলী’ ছবির একটি দৃশ্য দেখানো হয়েছে, যেখানে অজিতকে ‘কাট্টাপ্পা’ হিসাবে ‘বাহুবলী’ শরদের পিঠে ছুরি বিঁধিয়ে দিতে দেখা গিয়েছে। পোস্টারে শরদ এবং অজিতের সঙ্গে মিল রয়েছে এমন কালো অবয়ব দেখানো হলেও কারও মুখ স্পষ্ট ভাবে দেখানো হয়নি। পাশাপাশি পোস্টারে কোনও নামেরও উল্লেখ নেই। পোস্টারে লেখা, ‘‘পুরো দেশ লুকিয়ে থাকা বিশ্বাসঘাতকদের দেখছে। জনসাধারণ এই ধরনের লোককে ক্ষমা করবে না।’’
শিন্ডে-বিজেপি জোট সরকারে অজিত হাত মেলানোর পর এনসিপির দিল্লি কার্যালয়ের বাইরে থেকে তাঁর এবং তাঁর অনুগামী নেতা প্রফুল পটেলের নামাঙ্কিত সব পোস্টার সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার বদলে লাগানো হয়েছে ‘গদ্দার’ লেখা এই নতুন পোস্টার।
পোস্টার এবং হোর্ডিং নিয়ে এর আগেও রাজনীতি দেখা গিয়েছে এনসিপির অন্দরে। গত কয়েক মাস ধরেই গুঞ্জন চলছিল, এনসিপির একাধিক বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতে চলেছেন অজিত। জুন মাসে দিল্লিতে এনসিপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের পোস্টারে তাঁর ছবি না-থাকা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। যদিও তখন এনসিপির পোস্টার থেকে প্রফুলের ছবি সরানো হয়নি। জল্পনা সত্যি করে গত রবিবার শিন্ডেসেনা-বিজেপি জোট সরকারের যোগ দিয়েছেন অজিত।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার অজিত-সহ ন’জন এনসিপি বিধায়ক মহারাষ্ট্রের শিন্ডেসেনা-বিজেপি জোট সরকারের মন্ত্রিপদে শপথ নিয়েছিলেন। এর পর বুধবার মুম্বইয়ের বান্দ্রায় এমইটি কলেজ অডিটোরিয়ামে হওয়া এক বৈঠকে অজিত বলেন, ‘‘সরকারে যোগ দেওয়ার দু’দিন আগেই এনসিপির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি আমি।’’ একই সঙ্গে স্পষ্ট ঘোষণা করেন, “আমি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হতে চাই।” তাঁর শিবিরের দাবি, বান্দ্রায় তাঁদের বৈঠকে দলের ৪০ জন বিধায়ক হাজির ছিলেন। একই সঙ্গে অজিতপন্থীরা এনসিপির নাম এবং প্রতীকের দাবিও জানিয়েছে। যদিও শরদের দাবি, তাঁর থেকে দলের প্রতীক কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না।
বান্দ্রায় অজিতের বৈঠক চলাকালীন মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরে নরিম্যান পয়েন্টে অনুগামী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন শরদ। অজিতের বৈঠকে দলের ৪০ জন বিধায়ক উপস্থিত থাকলেও শরদের মঞ্চে দেখা যায় এনসিপির মাত্র ১৩ বিধায়ককে। অনুগামী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে নতুন ‘লড়াই’ শুরু করার কথা ঘোষণা করে শরদ বলেন, ‘‘আমাদের হাত থেকে এনসিপির প্রতীক কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না।’’