—প্রতীকী চিত্র।
নয়াদিল্লি, ৩ জুলাই: নয়া ফৌজদারি আইনে যৌন নিগ্রহকে ‘লিঙ্গ নিরপেক্ষ’ করা হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় নির্যাতিত ও অপরাধীর ক্ষেত্রে যৌন অপরাধে লিঙ্গ বৈষম্য করা হবে না। সে ক্ষেত্রে নাবালিকার পাশাপাশি নাবালকের যৌন হেনস্থাতেও শাস্তির ব্যবস্থা থাকছে। উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন করা হলেও নয়া আইনে বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ রূপে দেখা হচ্ছে না।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৬এ ধারায় ‘নাবালিকা’ কথাটির উল্লেখ ছিল। কিন্তু ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ওই কথাটি বিলোপ করা হয়েছে। নয়া আইনে বলা হয়েছে, ১৮ বছরের কম বয়সি ছেলে ও মেয়ে উভয়েই যৌন নিগ্রহের শিকার হতে পারে। তাই ভারতীয় দণ্ডবিধিতে যে ‘নাবালিকা’ শব্দটি ছিল, তার বদলে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৯৬ অনুচ্ছেদে ‘শিশু’ (চাইল্ড) শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। নাবালককে যৌন নিগ্রহ শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেই বিবেচিত।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৬বি ধারাকেও ভারতীয় ন্যায় সংহিতায়য় লিঙ্গ নিরপেক্ষ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধিতে উল্লেখ ছিল ‘বিদেশ থেকে কোনও নাবালিকাকে নিয়ে আসা অপরাধ’, নয়া আইনে ‘নাবালিকা’র জায়গায়, ‘বিদেশ থেকে নাবালক ও নাবালিকাকে আনা’ কথাটি ব্যবহার করা হয়েছে। নয়া আইনের ১৪১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ২১ বছরের কম বয়সি কোনও মেয়ে অথবা ১৮ বছরের কম বয়সি কোনও ছেলেকে অবৈধ ভাবে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য, তাদের প্রলুদ্ধ করে ভারতে নিয়ে আসা হলে, তা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হবেন। নাবালক-নাবালিকা ধর্ষণের ক্ষেত্রে শাস্তিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১২ বছরের কম, ১৬ বছরের কম এবং ১৮ বছরের কোনও নাবালক-নাবালিকা ধর্ষণের শিকার হলে, অভিযুক্তে জন্য নির্যাতিত বা নির্যাতিতার বয়স বিবেচনা করে শাস্তির সংস্থান রাখা হয়েছে।
পাশাপাশি ন্যায় সংহিতায় একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে। যার শিরোনাম, ‘মহিলা ও শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ’। এ ছাড়া ন্যায় সংহিতায় নাবালিকা ধর্ষণ সংক্রান্ত অপরাধের ক্ষেত্রে বিধিতে বদলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, অপরাধের নয়া সংজ্ঞায় এই রকম বিধি রাখা হয়েছে যাতে সব নাবালক মেয়ের গণধর্ষণের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা হবে। ভারতীয় দণ্ডবিধিতে শুধুমাত্র ১২ বছরের কমবয়সি মেয়েদের গণধর্ষণে এমন বিধির বন্দোবস্ত ছিল। আরও একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হল, এই আগে দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ধর্ষণের অভিযোগ গ্রাহ্য হত, যদি স্ত্রীয়ের বয়স ১৫ বছরের কম হত। নয়া আইনে তা বাড়িয়ে ১৮ করা হয়েছে। তবে বৈবাহিক ধর্ষণের বিষয়টিকে অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। সংবাদ সংস্থা