হার্দিক পটেল।
পাতিদার সংরক্ষণ আন্দোলনের নেতা ২৪ বছর বয়সি হার্দিক পটেলের নামে ‘সেক্স সিডি’ নিয়ে চাঞ্চল্য ভোটমুখী গুজরাতে। গত কাল এই ধরনের একটি সিডি সামনে আসার পরে তাকে ‘ভুয়ো’ বলেছিলেন হার্দিক। একে বিজেপির ‘নোংরা রাজনীতি’ আখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই এ বার সামনে এল আর একটি সিডি। যেখানে হার্দিকের মতো দেখতে এক ব্যক্তি দু’জন পুরুষ ও এক মহিলার সঙ্গে বিছানায় আয়েশ করছেন। গত কালের সিডিটিকে ভুয়ো বললেও হার্দিক মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘আমি এখনও বিয়ে করিনি, পুরুষত্বহীনও নই।’’ তবে নতুন সিডি সামনে আসার পরে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি পাতিদার আন্দোলনের নেতা।
গত কাল ‘সেক্স সিডি’-টি স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচার হতেই গুজরাতে হইচই শুরু হয়ে যায়। চার মিনিটের ভিডিওটি গত মে মাসে একটি হোটেলের ঘরে গোপন ক্যামেরায় তোলা হয়েছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। সেখানে হার্দিকের মতো দেখতে এক ব্যক্তিকে অজ্ঞাত পরিচয় এক মহিলার সঙ্গে দেখা গিয়েছে। চাঞ্চল্য শুরু হতেই হার্দিক জানিয়েদেন, সিডিতে যাকে দেখা যাচ্ছে, তিনি আর ওই ব্যক্তি এক নন। তবে এর পরেই গুজরাতে মোদী-বিরোধী আন্দোলনের আর এক নেতা জিজ্ঞেস মেওয়ানি টুইট করেন, ‘‘প্রিয় হার্দিক, চিন্তা করবেন না। আমি আপনার সঙ্গে আছি। আর যৌনতার অধিকার একটি মৌলিক অধিকার। কিন্তু আপনার গোপনীয়তা ভঙ্গ করানোর অধিকার কারও নেই।’’
সিডি নিয়ে পাল্টা আক্রমণে নামেন হার্দিকও। বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘বিজেপি নোংরা রাজনীতি করছে। আগেই বলেছিলাম, আমার বদনাম করতে ওরা এমন সিডি প্রকাশ করতে পারে। এটা প্রমাণ করে যে হার্দিক পটেল অনেক বড় মাপের শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে।’’ বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পাতিদার নেতার মন্তব্য, ‘‘আমাকে যত খুশি বদনাম করো, কোনও ফারাক পড়বে না। তবে এতে গুজরাতের মহিলাদের অপমান করা হল।’’ হার্দিকের মতে, বিদেশ থেকে তার নামে ভুয়ো ভিডিওটি আপলোড করা হয়েছে।
এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় আর একটি ভিডিওতেও বিতর্ক ছড়ায়। সেখানে হার্দিকের মতো দেখতে এক ব্যক্তিকে বন্ধুদের সঙ্গে মদ্যপান করতে দেখা গিয়েছে। স্থানীয় গুজরাতি চ্যানেলে সেটি সম্প্রচারও হয়। সেখানে বলা হয়, ‘বন্ধুদের সঙ্গে মদ্যপান করছেন হার্দিক পটেল।’ এটিও মে মাসে তোলা বলে মনে করা হচ্ছে। তখন হার্দিক ও তাঁর সহযোগীরা পটেলদের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে মাথা কামিয়ে ১৫৫ কিলোমিটার পদযাত্রা করেছিলেন। গুজরাতে মদ নিষিদ্ধ। ফলে বিতর্ক আরও নতুন মাত্রা পেয়েছে।
অবশ্য এর আগেও ২০১৫ সালে পাতিদারদের সংরক্ষণের দাবি নিয়ে যখন আন্দোলন শুরু করেছিলেন হার্দিক, তখনও এই ধরনের বিতর্কিত সিডি সামনে এসেছিল। সেই ভিডিওতে হার্দিক ছিলেন কিনা, তা বোঝা যায়নি। তবে এর সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল পাতিদার আন্দোলনের নেতার নাম। তখন অবশ্য সিডিটিকে চ্যালেঞ্জ করেননি হার্দিক। তবে এ বার মোদী-বিরোধী আন্দোলনের নেতা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে কী পদক্ষেপ করা যায়, তা দেখতে আইনজীবীর পরামর্শ নিচ্ছেন তিনি।
‘সেক্স সিডি’ নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে বিজেপি দাবি করেছে, এর সঙ্গে তাদের যোগ নেই। বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনসুখ মন্দাভিয়া বলেন, ‘‘যদি হার্দিক পটেল দাবি করেন সিডিটি ভুয়ো, তা হলে তিনি পুলিশের কাছে যাচ্ছেন না কেন?’’
হার্দিকের নাম জড়িয়ে থাকা কোনও ভিডিও-রই সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।