ই-মেল করে হুমকি তারা আগেই দিয়েছিল। প্রজাতন্ত্র দিবসের সকালে ফের ফোনে আলফা সেনাধ্যক্ষ পরেশ বরুয়া জানান, সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে বিস্ফোরণ। চ্যালেঞ্জ জানান, কেউ আটকাতে পারবে না। শেষ পর্যন্ত সেটাই সত্যি হল। প্রজাতন্ত্র দিবসের সকাল থেকে ‘নির্বিঘ্নে’ উজানি অসম-সহ উত্তর-পূর্বে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটালো পরেশ বরুয়ার নেতৃত্বাধীন আলফা (স্বাধীন)। তবে আশার কথা একটাই, এই বিস্ফোরণে কোনও হতাহতের খবর নেই।
জঙ্গিদের যৌথ মঞ্চের সহযোগিতায় আলফা দু’টি বিস্ফোরণ ঘটায় মণিপুরেও। অরুণাচলপ্রদেশের চৌখামেও ঘটানো হয় একটি বিস্ফোরণ। তবে সেখানেও হতাহতের কোনও খবর নেই। এ দিন, উজানি অসমের ডিব্রুগড়, চড়াইদেও, শিবসাগর এবং তিনসুকিয়া জেলাকে বেছে নিয়েছিল আলফা।
ডিব্রুগড়ের একটি চা-বাগানের শুকনো নালায় বিস্ফোরণ ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণ স্থল থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরেই জেলা প্রশাসনের কুচকাওয়াজ চলছিল। চড়াইদেও জেলার ঢোলাবাগান ও বিহুবরে একটি পেট্রোল পাম্পের পাশে ও রাস্তার পাশের শুকনো নালায় দু’টি বিস্ফোরণ হয়। শিবসাগরের লেঙিবর এলাকার একটি চা-বাগানে এবং মাজপানি এলাকায় দু’টি বিস্ফোরণ হয়। তিনসুকিয়ার ধলা-শদিয়া সেতুর কাছে সুখান পুখরি এলাকায় এবং সিসিমি গ্রামের কাছে একটি খালি জলের ট্যাঙ্কের মধ্যে বিস্ফোরণ হয়। পরে তিনসুকিয়া থেকে তিনটি না ফাটা আইইডি উদ্ধারও করা হয়েছে। মণিপুরের ইম্ফলে মন্ত্রীপুখুরি ও মণিপুর কলেজের কাছে দু’টি বিস্ফোরণ হয়। দশম বিস্ফোরণটি হয় অরুণাচলপ্রদেশের চৌখামে।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, এ দিনের বিস্ফোরণের ব্যাপকতা ছিল অনেক কম। পুলিশ কর্তাদের ধারণা, উপস্থিতি জাহির করতেই এমন মাঠেঘাটে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। তাঁদের দাবি, প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা এতটাই জোরদার করা হয়েছিল যে ‘স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্ট’-এ বিস্ফোরণ ঘটাতে জঙ্গিরা পারেনি। তবে আগাম হুমকি বজায় রাখতেই এই ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। পুলিশ এই চার জেলা ও তার আশপাশের এলাকাগুলিতে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।