তখনও মুক্তি পায়নি শিশুরা। সুভাষ বাথামের বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
মেয়ের জন্মদিন পালনের বাহানায় গ্রামের ছেলেমেয়েদের বাড়িতে ডেকে পণবন্দি করার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উত্তরপ্রদেশের ফারুখাবাদে কাঠারিয়া এই ঘটনা ঘটেছে। টানা পাঁচ ঘণ্টা ধরে নিজের স্ত্রী, মেয়ে এবং ২০ জন কচিকাঁচাকে ওই ব্যক্তি পণবন্দি করে রেখেছেন বলেছে জানা গিয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের মামলা চলছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। পণবন্দি সকলকে নিরাপদে উদ্ধার করতে ওই ব্যক্তির সঙ্গে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্য়ায় ফারুখাবাদের কাঠারিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্তের নাম সুভাষ বাথাম। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়ের জন্মদিন পালন করবেন বলে এ দিন পাড়ার কচিকাঁচাদের নিজের বাড়িতে ডেকে আনেন সুভাষ। সকলে এসে পৌঁছতেই তাঁদের পণবন্দি করেন সুভাষ। পণবন্দিদের তালিকায় রয়েছে তাঁর স্ত্রী এবং মেয়েও।
নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও ছেলেমেয়ে বাড়ি না ফেরায় টনক নড়ে পাড়ার লোকজনের। সঙ্গে সঙ্গে ওই বাড়িতে হাজির হন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের দেখামাত্রই সুভাষ গুলি চালাতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। বাড়ির ত্রিসীমানায় ঘেঁষতে না পেরে শেষ মেশ পুলিশে খবর দেন তাঁরা। খবর পাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই পুলিশের একটি ভ্যান সেখানে পৌঁছে যায়। পৌঁছয় কানপুর জোনের ইনস্পেক্টরে নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসদমন শাখার একটি বাহিনীও। কিন্তু তাদের লক্ষ্য করে গুলি এবং বোমাও ছোড়ে অভিযুক্ত। পরিস্থিতি বুঝে তাই কথা বলে তাঁকে বাগে আনার চেষ্টা করা হয়। তবে এখনও পর্যন্ত পণবন্দিদের মধ্যে থেকে কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: হামলার কয়েক মিনিট আগে ফেসবুক লাইভ, কে এই রামভক্ত গোপাল?
আরও পড়ুন: দোষীকে রেয়াত করা হবে না, জামিয়ার ঘটনায় বললেন অমিত শাহ
উত্তরপ্রদেশের ডিজি ওপি সিংহ জানিয়েছেন, বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত পুলিশ নামানো হয়েছে ঘটনাস্থলে। সকল পণবন্দির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাই তাঁদের প্রধান লক্ষ্য। তাই কথাবার্তা চালিয়ে ওই ব্যক্তিকে বাগে আনার চেষ্টা চলছে। ওপি সিংহ বলেন, ‘‘বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত অফিসাররা যেমন রয়েছেন, তেমনই এনএসজি কম্যান্ডোরাও তৈরি রয়েছেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পণবন্দি শিশুদের উদ্ধার করাই আমাদের লক্ষ্য। পরিস্থিতি খুবই কঠিন। শীর্ষস্থানীয় সব পুলিশ অধিকারিকরাই ঘটনাস্থলে রয়েছেন।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে তাঁদের দেখেই চিৎকার চেঁচামেচি জুড়ে দেন অভিযুক্ত। তিনি নির্দোষ, কোনও খুন করেননি বলেও দাবি করতে থাকেন। অভিযুক্ত মানসিক ভাবে অসুস্থ হতে পারেন বলেও সন্দেহ পুলিশের। খুব শীঘ্র পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী উত্তরপ্রদেশের আইন–শৃঙ্খলার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার পিভি রামশাস্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বাহিনী ঘটনাস্থলে রয়েছে। ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা চাালাচ্ছি আমরা। আশা করছি খুব শীঘ্রই সমস্ত শিশুকে নিরাপদে বার করে আনতে পারব। কৌশলমতোই এগোচ্ছি আমরা। এখনই সব কিছু খোলসা করতে চাই না। তবে কথা দিচ্ছি, এক জনেরও ক্ষতি হবে না। ’’ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন বলে জানা গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন তিনি।