প্রতীকী ছবি
ব্রিটেনে ট্রায়াল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেই সংশয় তৈরি হয়েছিল। প্রত্যাশিতভাবেই ভারতেও স্থগিত হয়ে গেল অক্সফোর্ডের করোনা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল)। অক্সফোর্ডের তৈরি টিকা ‘কোভিশিল্ড’-এর প্রয়োগ ভারতে করছিল সিরাম ইনস্টিটিউট। সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকাও ছিল তাদের সঙ্গে । আজ, বৃহস্পতিবার সংস্থার তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ভারতেও কোভিশিল্ড পরীক্ষার তৃতীয় পর্বে মানবদেহে তার প্রয়োগ স্থগিত রাখা হচ্ছে। তৃতীয় তথা শেষ ধাপে এসে টিকার প্রয়োগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গোটা বিশ্বের সঙ্গে ভারতেও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল কোভিশিল্ড-এর ভবিষ্যৎ।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি কোভিশিল্ড-এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলছিল বিশ্বের চারটি দেশে। অক্সফোর্ডের সঙ্গে যৌথ ভাবে ওই ট্রায়াল চালাচ্ছিল সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা। দ্বিতীয় ধাপের প্রয়োগ নির্বিঘ্নেই শেষ হয়েছিল। চলছিল তৃতীয় পর্যায়। তার মধ্যেই অ্যাস্ট্রাজেনকা বুধবার জানায়, ব্রিটেনে টিকা-নেওয়া এক স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে অজানা অসুস্থতা দেখা দেওয়ায় পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বন্ধ রাখা হচ্ছে। অন্য দেশগুলিতেও ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বন্ধ হয়ে যায়। বুধবার পর্যন্ত এ নিয়ে সিদ্ধান্ত জানায়নি ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। তবে ওই দিন রাতেই ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই) সিরাম ইনস্টিটিউটকে চিঠি পাঠিয়ে জানতে চায়, টিকার বিষয়ে তাদের অবস্থান কী?অন্যান্য দেশে বন্ধ হলেও ভারতে কেন পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে?
এই পরিস্থিতিতেই বৃহস্পতিবার সিরাম ইনস্টিটিউট বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘অ্যাস্ট্রাজেনেকা নতুন করে পরীক্ষা শুরু না করা পর্যন্ত আমরা ভারতে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বন্ধ রাখছি। পরিস্থিতি পুনর্বিবেচনার কাজ চলছে।’ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, সারা ভারতে ১৭টি কেন্দ্রে মোট ১৬০০ জনের উপর তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রস্তুতি চলছিল। পরের সপ্তাহেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। তার মুখোমুখি এসে এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ভারতেও কোভিড টিকা তৈরির প্রক্রিয়া বড় ধাক্কা খেল। বিপাকে পড়ল সিরাম ইনস্টিটিউটও।
আরও পড়ুন: স্বেচ্ছাসেবকের অজানা অসুখ, স্থগিত অক্সফোর্ডের কোভিড টিকার ট্রায়াল
আরও পড়ুন: প্যাংগংয়ের পাড়ে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, বলছে উপগ্রহ ছবি
ডিজিসিআই-এর নোটিস পেয়ে সিরাম ইনস্টিটিউট বুধবার জানিয়েছিল, সরকারের সমস্ত নির্দেশিকা মেনেই তারা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এ দিন বিবৃতিতে তাদের জানানো হয়েছে, ‘আমরা ডিজিসিআই-এর গাইডলাইন মেনে সব কিছু করছি। তবে এ বিষয়ে এখন আর কোনও মন্তব্য করা হবে না। অতিরিক্ত তথ্য জানতে ডিজিসিআই-এর সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’’ আরও বলা হয়েছে, ‘এত দিন পর্যন্ত ডিজিসিআই-এর নির্দেশিকা মেনেই আমরা কাজ করেছি। এখনও পর্যন্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থা আমাদের ট্রায়াল স্থগিত করতে বলেনি। নিরাপত্তা নিয়ে তাদের কোনও উদ্বেগ থাকলে আমরা তাদের নির্দেশ মেনে চলব এবং নির্দিষ্ট নিয়মকানুন মেনেই কাজ করব।’