ভারতীয় প্রেমিক শচীনের সঙ্গে পাক বধূ সীমা। ছবি: সংগৃহীত।
চার সন্তানকে নিয়ে বেআইনি ভাবে নেপাল হয়ে ভারতে ঢুকে পড়েছিলেন পাকিস্তানের সীমা গুলাম হায়দর। হিন্দু যুবক শচীন মিনার সঙ্গে ঘর বাঁধতে চেয়েছিলেন তিনি। বিয়ের পর জানিয়েছিলেন আর পাকিস্তানে ফিরতে চান না। কিন্তু গত দু’দিন হল সীমা এবং তাঁর স্বামী শচীনের কোনও খোঁজ নেই। এমনটাই জানাচ্ছেন তাঁদের প্রতিবেশীরা। নয়ডার বাড়িতে তাঁরা কেউই নিয়ে বলে খবর। একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, গত ১৩ জুলাই শচীন-সীমাকে শেষ বার দেখেছেন প্রতিবেশীরা। তার পর তাঁরা কোথায় গিয়েছেন, এক সঙ্গে গিয়েছেন কি না, কিছুই জানেন না কেউ। অন্য দিকে, আর একটি সূত্র বলছে, উত্তর প্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখা বা এটিএসের আধিকারিকরা ওই দম্পতিকে প্রায় ৬ ঘণ্টা জেরা করেন।
অনলাইন গেম পাবজি খেলার সময় ২০১৯ সালে শচীনের সঙ্গে পরিচয় হয় সীমার। সেখান থেকে প্রেম। ২২ বছরের যুবকের প্রেমে পড়ে প্রায় ১,৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে ছুটে আসেন ৩০ বছরের সীমা। শুধু একা নন। সঙ্গে ছিল তাঁর চার সন্তান, যাদের সবার বয়সই সাত বছরের কম। ভিসা ছাড়া নেপালের মাধ্যমে বেআইনি ভাবে ভারতে প্রবেশ করার অভিযোগে ৪ জুলাই গ্রেফতার হন সীমা। তাঁকে আশ্রয় দিয়ে গ্রেফতার হন শচীন ও তাঁর বাবা নেত্রপাল। পরে জামিনে ছাড়াও পান তাঁরা।
জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সীমা হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি জানান, আর পদবি ব্যবহার করবেন না। এখন থেকে তিনি শুধুই সীমা। তাঁর কথায়, ‘‘সীমা নামটি হিন্দু এবং মুসলমান যে কোনও ধর্মের মেয়েরই হয়। তাই আমি এখন থেকে শুধুই সীমা। অথবা, নিজেকে সীমা শচীন বলে পরিচয় দেব। আমার সন্তানদেরও নাম পরিবর্তন করে রাজ, প্রিয়ঙ্কা, পরী এবং মুন্নি রেখেছি।’’ সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’-র সঙ্গে কথা বলার সময় সীমা জানিয়েছেন, তিনি এখন প্রতিদিন ঈশ্বরের পুজো করেন এবং হাত জোড় করে সকলকে নমস্কার করেন। বড়দের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন। তাঁর দাবি, তিনি হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন এবং শচীনের পরিবারের মতো নিরামিষ খাবার খাওয়া শুরু করেছেন।’
উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে, সীমা এবং শচীন গ্রেটার নয়ডার রাবুপুরা এলাকায় থাকেন। শচীনের একটি দোকান রয়েছে। কিন্তু তাঁরা এখন কোথায়, তার কোনও সদুত্তর মেলেনি। মনে করা হচ্ছে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন দম্পতি। তবে পুরো বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
পাকিস্তানে গুলিস্তান-এ-জওহরের ভিট্টাইয়াবাদে ভাড়া থাকতেন সীমারা। তিনটি ঘুপচি ঘরে ছিল সীমার সংসার। তাঁর স্বামী গুলাম কাজ করেন সৌদি আরবে। ওই বাড়ির মালিকের ১৬ বছরের ছেলে নুর মহম্মদ বলেন, ‘‘সীমা ভারতেই থাকতে পারেন। কিন্তু তাঁর চার সন্তানকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত। আর এখন তিনি আর মুসলিমও নন।’’