উদ্ধার হওয়া সেই বোমা। ছবি: সংগৃহীত।
এ বার মাওবাদী অধ্যুষিত ছত্তীসগঢ়ে নয়া বোমার সন্ধান পেল নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী। রবিবার ছত্তীসগঢ়ের বিজাপুরের জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে এই বোমার খোঁজ মিলেছে। নিরাপত্তাবাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, কমপক্ষে ২৫ মিটার ব্যাসার্ধের এলাকা জুড়ে মারণযজ্ঞ চালাতে পারে এই নয়া বোমা।
রবিবার বিজাপুরের গোর্না, মানকেলি এবং ইশুলনার জঙ্গলে তল্লাশি অভিযান চালায় ডিস্ট্রিক্ট রিজ়ার্ভ গার্ড (ডিআরজি) এবং ছত্তীসগঢ় পুলিশের বম্ব ডিটেকশন অ্যান্ড ডিসপোজ়াল স্কোয়াড (বিডিডিএস)-এর যৌথ দল। অভিযান চালিয়ে মাটির নীচে পুঁতে রাখা পাঁচ কেজি ওজনের তিনটি আইইডি বিস্ফোরক খুঁজে পাওয়া যায়। এর অনতিদূরেই উদ্ধার হয় ১০ কেজি ওজনের একটি বোমা, যা অন্যগুলির চেয়ে আকারে বড়। একেই ‘হাইলি এক্সপ্লোসিভ’ বা এইচই বোমা হিসাবে চিহ্নিত করেছেন নিরাপত্তাকর্মীরা।
বিজাপুর পুলিশের ডিএসপি (নকশাল বিরোধী অভিযান) সুদীপ সরকার সোমবার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ছত্তীসগঢ়ের মাওবাদী অধ্যুষিত জঙ্গলে এই প্রথম এত শক্তিশালী বোমার সন্ধান পাওয়া গেল। নিরাপত্তাবাহিনীর তরফেও জানানো হয়েছে, ৫১ মিলিমিটার মর্টারের সাহায্যে এই বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এর সাহায্যে আশপাশের প্রায় ২৫ মিটার ব্যাসার্ধের এলাকার মধ্যে থাকা যে কোনও প্রাণীকে মেরে ফেলা যায়। এমনকি, ৮০ মিটার দূরের এলাকা পর্যন্তও এর প্রভাব পড়তে পারে।
যদিও আধিকারিকেরা মনে করছেন, মাওবাদীদের পক্ষে এত শক্তিশালী অস্ত্র বানানো সম্ভব নয়। সম্ভবত, এর আগের কোনও অভিযানের সময় নিরাপত্তাবাহিনীর থেকেই লুট করা হয়েছে ওই বোমাগুলি। উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত বিজাপুরের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় পুঁতে রাখা মোট ২০৬টি বিস্ফোরক খুঁজে পেয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী। পরিসংখ্যান বলছে, ২০০০ সালে ছত্তীসগঢ় রাজ্যের সূচনাপর্ব থেকে এখনও পর্যন্ত ৩,৫৫০টিরও বেশি বোমা বাজেয়াপ্ত করে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। অন্য দিকে, এই ২৪ বছরে বিস্ফোরণ হয়েছে ১,১৭০টিরও বেশি বোমা, যার জেরে প্রাণ হারিয়েছেন বহু নিরাপত্তাকর্মী। চলতি বছরেও সেখানে মাওবাদীদের পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণে আট জন পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে।