পরকীয়া অপরাধই, কোর্টে বলল কেন্দ্র

পরকীয়া সম্পর্ককে ‘বেআইনি’ না-বললে বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যাবে, মত কেন্দ্রীয় সরকারের। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারা খারিজ করার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছিল। সেই মামলায় শীর্ষ আদালতকে হলফনামা দিয়ে আজ এই কথা জানাল কেন্দ্রীয় সরকার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮ ০৪:২৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

পরকীয়া সম্পর্ককে ‘বেআইনি’ না-বললে বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যাবে, মত কেন্দ্রীয় সরকারের।

Advertisement

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারা খারিজ করার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছিল। সেই মামলায় শীর্ষ আদালতকে হলফনামা দিয়ে আজ এই কথা জানাল কেন্দ্রীয় সরকার।

কী রয়েছে ৪৯৭ ধারায়?

Advertisement

এই ধারায় বলা হয়েছে, কোনও পুরুষ যদি কোনও বিবাহিতা মহিলার সঙ্গে, তাঁর স্বামীর অনুমতি ছাড়াই, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে লিপ্ত হন, তা হলে তিনি দণ্ডনীয় অপরাধ করবেন। পরকীয়া সম্পর্কে জড়ানো মহিলার জন্য অবশ্য কোনও সাজার কথা দণ্ডবিধির এই ধারায় উল্লিখিত নেই।

১৫৮ বছরের পুরনো এই আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন এক অনাবাসী ভারতীয় জোসেফ শাইন। তাঁর মতে, এই আইনে পুরুষদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। আবেদনে জোসেফ লিখেছিলেন, ‘‘যেখানে দু’জন সহমত হওয়ার পরেই এই যৌন সম্পর্ক তৈরি হয়, তখন কেন শুধু পুরুষকে দণ্ডিত করা হবে?
এই আইন সংবিধান-বিরোধীও বটে। কারণ সংবিধানের ১৪ (আইনের চোখে সব ধর্ম, বর্ণ, জাত এবং লিঙ্গের মানুষ সমান), ১৫ (ধর্ম, বর্ণ, জাত, লিঙ্গ এবং জন্মস্থানের নিরিখে রাষ্ট্র কোনও বৈষম্যমূলক আচরণ করতে পারে না) এবং ২১ নম্বর (ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার), এই তিনটি অনুচ্ছেদে যা বলা হয়েছে, এই আইনটি তার উল্টো বলছে।’’ আবেদনকারীর মতে, এই আইন নারী-বিরোধীও। কারণ ‘স্বামীর অনুমতি ছাড়া পরকীয়া দণ্ডনীয় অপরাধ’ বললে মেয়েদের আসলে ‘পুরুষের সম্পত্তি’ ভাবা হয়।

সুপ্রিম কোর্টকে কেন্দ্র আর্জি জানিয়েছে, অবিলম্বে এই জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দেওয়া হোক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দেওয়া হলফনামায় বলা হয়েছে, ‘‘ভারতীয় দণ্ডবিধির এই ধারাটি বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানটি সমর্থন করে, টিকিয়ে রাখে এবং রক্ষা করে। এই ধারা লোপ পেলে বিয়ের পবিত্রতা ও শুদ্ধতায় আঘাত করা হবে। ভারতীয় ভাবাবেগের পক্ষে হানিকারক হবে সেটা। ভারতের অনন্য সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাঠামো টিকিয়ে রাখতে এই আইনের অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে।’’

কিন্তু দণ্ড কেন শুধু পুরুষটিকেই ভোগ করতে হবে?

এ প্রসঙ্গে কেন্দ্র ২০০৩ সালের মলিমথ কমিটির রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে জানায়, আইনটিকে কী ভাবে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ করা যায়, সেটা খতিয়ে দেখছে আইন কমিশন। কিছু দিনের মধ্যে আইন কমিশন কেন্দ্রীয় সরকারকে এ বিষয়ে রিপোর্ট দেবে। ‘‘আইনটির সংশোধন করা যেতেই পারে। কিন্তু পরকীয়াকে ‘অপরাধ নয়’-এর তকমা দিলে বৈবাহিক সম্পর্কের ভিতটাই নড়বড়ে হয়ে যাবে,’’ মত কেন্দ্রীয় সরকারের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement