coronavirus

মহারাষ্ট্রে জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা, আংশিক লকডাউন, পরিযায়ী শ্রমিকেরা মুম্বই ছাড়ছেন

ছাড় থাকছে খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে। রেস্তোরাঁগুলিতেও শুধু খাবার বাড়িতে নেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২১ ২০:২৪
Share:

ফাইল ছবি

করোনা সংক্রমণ রুখতে কঠোর হচ্ছে মহারাষ্ট্র সরকার। দিনের বেলা ৫ জনের বেশি জমায়েতে রবিবার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। এ ছাড়া, পরবর্তী নির্দেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহান্তে, অর্থাৎ শুক্রবার সন্ধ্যা ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৭টা পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউনের কথাও ঘোষণা করেছে উদ্ধব ঠাকরের প্রশাসন। তবে রবিবার প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত সম্পূর্ণ লকডাউন করার কোনও চিন্তা ভাবনা নেই। তাও আশঙ্কা কাজ করছে পরিযায়ী শ্রমিকদের মনে। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, সেই কারণেই মুম্বই ও মহারাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি শহর থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা।

Advertisement

পুণের পাশাপাশি মু্ম্বই শহরেও জারি করা হয়েছে রাত্রীকালীন কার্ফু। রাত ৮টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত এই কার্ফু কার্যকর থাকবে। পুণের মতো এখানেও ছাড় থাকছে হোম ডেলিভারি, খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে। রেস্তোরাঁগুলিতে শুধু খাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া গণপরিবহণ চলবে ৫০ শতাংশ মানুষ নিয়ে। বন্ধ থাকবে শপিং মল, সিনেমা হল।

গোটা মহারাষ্ট্রে লকডাউন না ঘোষণা করা হলেও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দিনে ৫ জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশ কোথাও ৫ জনের বেশি মানুষ জমায়েত করতে পারবেন না। সরকারি অফিসে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ চালাতে হবে। বেসরকারি যানবাহন ৫০ শতাংশের বেশি যাত্রী নিতে পারবে না, জানিয়েছেন মন্ত্রী নবাব মালিক। রবিবার মন্ত্রিসভার সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

Advertisement

কিন্তু সংক্রমণ রোধে সরকার সাধারণ মানুষের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করায় আশঙ্কায় ভুগছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। সংবাদসংস্থার খবর, সম্পূর্ণ লকডাউনের আশঙ্কায় অনেক শ্রমিকই মহারাষ্ট্র ছেড়ে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। মুম্বইয়ের স্টেশনে অপেক্ষারত শ্রমিকদের মধ্যে একজন সংবাদসংস্থাকে বলেছেন, ‘‘আমাদের ভয়, আবার লকডাউন হতে পারে। শেষবার আমাদের টাকা ফুরিয়ে গিয়েছিল। পরিবার অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন। আয় শূন্য হয়ে পড়েছিলাম। তাই এ বারে ঝুঁকি না নিয়ে আগে থেকেই বাড়ি ফিরতে চাই।’’

শনিবার মহারাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছিল প্রায় ৫০ হাজারে। শুধু মুম্বই শহরেই আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়ে যায়। একই চিত্র পুণেতেও। মু্ম্বইয়ের আগেই সেখানে রাত্রীকালীন কার্ফু জারি করেছে প্রশাসন। বন্ধ করা হয়েছে শপিং মল, ধর্মীয় স্থান। তাও এখনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত কয়েক দিন ধরেই সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ছে দেশে। রবিবার একধাক্কায় দৈনিক সংক্রমণ ৯৩ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। দীর্ঘ ৭ মাস পর এই প্রথম সংক্রমণ ফের ৯০ হাজার পেরোল। এর আগে, গত বছর ১৯ সেপ্টেম্বর দেশে দৈনিক সংক্রমণ ছিল ৯৩ হাজার ৩৩৭। রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক যে পরিসংখ্যান সামনে এনেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৯৩ হাজার ২৪৯ জন কোভিডে সংক্রমিত হয়েছেন। দৈনিক সংক্রমণ ১ লক্ষের কাছাকাছি হওয়ায় সব মিলিয়ে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে ১ কোটি ২৪ লক্ষ ৮৫ হাজার ৫০৯ হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রের অবস্থা সব চেয়ে খারাপ। যে কারণেই এই প্রশাসনিক তৎপরতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement