ধস্তাধস্তির এই দৃশ্যই সামনে এসেছে। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ)সমর্থনে বিজেপির মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার বাধল মধ্যপ্রদেশের রাজগড়ে। সেখানে বিজেপি সমর্থকদের সঙ্গে সঙ্ঘর্ষে জড়িয়ে পড়লেন পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে বিজেপি সমর্থকদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির জের গিয়ে পড়ে রাজগড়ের জেলাশাসক এবং উপ জেলাশাসকের উপরও। বিজেপি সমর্থকরা তাঁদের চুল ধরে টেনেছেন, কোমরে লাথি মেরেছেন বলে অভিযোগ করেছেন উপ জেলাশাসক। যদিও বিজেপির দাবি, উপ জেলাশাসক তাদের এক সমর্থককে কলার ধরে চড় মারলে বিবাদের সূত্রপাত হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও সিএএ-র সমর্থনে রবিবার মিছিল বার করেন বিজেপি সমর্থকরা। বাধা দিতে গেলে ৫০-১০০ জন মিলে পুলিশের উপর চড়াও হন। পরিস্থিতি সামাল দিতে দুই ডেপুটি প্রিয়া বর্মা এবং শ্রুতি আগরওয়ালকে নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন জেলাশাসক নিধি নিবেদিতা। বিজেপি সমর্থকদের নিরস্ত করার চেষ্টা করেন তাঁরা। এক জায়গায় বসার নির্দেশ দেন। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তখনই দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো সামনে এসেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, ধস্তাধস্তি চলাকালীন কলার ধরে কয়েকজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন প্রিয়া বর্মা। দু’এক জনকে থাপ্পড়ও মারতে দেখা যায় তাঁকে। তাতে পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে। চারপাশে পুলিশ মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও প্রিয়া বর্মার চুল ধরে টান দেন এক ব্যক্তি। সংবাদ সংস্থা এএনআই ওই ব্যক্তিকে বিজেপি সমর্থক বলে চিহ্নিত করেছে। আর একটি ভিডিয়োয়, জেলাশাসক নিধি নিবেদিতার সঙ্গে তেরঙ্গাধারী এক ব্যক্তির ধস্তাধস্তিও ধরা পড়েছে।
উপ জেলাশাসক প্রিয়া বর্মার সঙ্গে ধস্তাধস্তি আন্দোলনকারীদের।
আরও পড়ুন: অমিত শাহের পর জেপি নড্ডাই হতে চলেছেন বিজেপির সভাপতি
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রিয়া বর্মা বলেন, ‘‘জেলায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করছিলাম। উল্টো দিক থেকে একটি ভিড় এসে আমাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ শুরু করে। আমাদের টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়। তার পরেই ভিড়কে বাগে আনার চেষ্টা করি আমরা। ওদের এক জায়গায় বসতে বলেছিলাম আমরা। কিন্তু কেউ কথা কানে তোলেননি। তার পর পুলিশ লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়।’’ ভিড়ের মধ্যে থেকে তাঁর কোমরে লাথি মারা হয় বলেও অভিযোগ করেছেন প্রিয়া বর্মা। বিষয়টি নিয়ে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিক্ষোভকারীকে রোখার চেষ্টা জেলাশাসক নিধির।
আরও পড়ুন: শীত বিদায়ের ইঙ্গিত, তবু পশ্চিমী ঝঞ্ঝা কাটলে ফের নামতে পারে পারদ
বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য গোটা ঘটনায় পুলিশ এবং প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। দলের নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান জেলশাসকের তীব্র নিন্দা করেছেন। টুইটারে শিবরাজ লেখেন, ‘‘জেলাশাসক ম্যাডাম, আইনের কোন বই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের গায়ে হাত তোলার অধিকার দিয়েছে আপনাকে?’’ মধ্যপ্রদেশের মানুষ এই হিটলারি শাসন বরদাস্ত করবেন না বলে রাজ্যের কংগ্রেস সরকারকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। তবে কমলনাথের সরকার পুলিশ এবং ওই জেলাশাসকের পাশেই দাঁড়িয়েছে। ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।