প্রতীকী ছবি।
স্কুলে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা নির্মিত শৌচাগারের সংখ্যা ও গুণমানে গরমিল উঠে এসেছে সিএজি-র রিপোর্টে। তাকে হাতিয়ার করে কেন্দ্রকে বিঁধলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। আক্রমণ শানালেন সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরিও।
বৃহস্পতিবার চিদম্বরমের টুইট, “সিএজি-র নমুনা সমীক্ষা (স্যাম্পল সার্ভে) অনুযায়ী, স্কুলে ‘খাতায়-কলমে তৈরি’ শৌচাগারের মধ্যে ৪০ শতাংশেরই হয় অস্তিত্ব নেই, নয় তা ব্যবহারযোগ্য নয়।” তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কিছু দিন আগে অনেকটা এ রকম ছবি উঠে এসেছিল স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের বিষয়েও। শৌচাগারই যদি না-থাকে, তা হলে ভারতে খোলা জায়গায় মল-মূত্র ত্যাগ করা বন্ধ হয়েছে বলা যাবে কী ভাবে?’’ টুইটে এই সংক্রান্ত খবর তুলে ধরে ইয়েচুরিরও কটাক্ষ, “এ বার এই ব্যর্থতার দায় না-নিয়ে (নরেন্দ্র) মোদী হয় (প্রধানমন্ত্রীর) নতুন বাসভবন তৈরি কিংবা বিমান কেনায় বিপুল টাকা ব্যয় করবেন, নয়তো আকাশছোঁয়া অঙ্ক খরচ করবেন বিজ্ঞাপনে।”
পূর্বতন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের (বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রক) ঘোষিত প্রকল্পে সারা দেশে স্কুলে ১.৪ লক্ষ শৌচাগার তৈরি করেছিল ৫৩টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। এর মধ্যে ২,১৬২ কোটি টাকায় ১.৩ লক্ষ শৌচাগার গড়েছিল ৭টি সংস্থা। তার মধ্যে নমুনা হিসেবে বেছে নেওয়া ১৫টি রাজ্যের ২,০৪৮টি স্কুলের ২,৬৯৫টি শৌচাগারে সমীক্ষা করেছে সিএজি। তাতে দেখা যাচ্ছে, ৮৩টি শৌচাগার তৈরিই করা হয়নি। ৮৬টি তৈরির কাজ অসম্পূর্ণ। ২০০টি যে স্কুলে করার কথা, সেখানে তৈরি হয়নি। তৈরি হওয়া বাকি ২,৩২৬টি শৌচাগারের মধ্যে ৬৯১টি (৩০%) ব্যবহার করা যায় না কলে জল না-থাকা, অপরিচ্ছন্নতা, অন্য কাজে ব্যবহার হওয়া ইত্যাদি কারণে। ৭০ শতাংশের বেশি শৌচাগারে জলের সংযোগ নেই। অপরিচ্ছন্ন ৭৫%। ১,৯৬৭টি কো-এড স্কুলে গিয়ে সিএজি দেখেছে, ৯৯টিতে ব্যবহারযোগ্য শৌচাগার নেই। ৪৩৬টি স্কুলে ব্যবহারযোগ্য শৌচাগার একটি। অর্থাৎ, ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা শৌচাগারের বন্দোবস্ত নেই।
মোট তৈরি শৌচাগারের ২ শতাংশে সমীক্ষা চালিয়েই এই করুণ ছবি ফুটে ওঠায়, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে রিপোর্টে। বিরোধীদের প্রশ্ন, ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ সম্পর্কে প্রচারের এত ঢাক পিটিয়ে এই তবে তার আসল ছবি?