হায়দরাবাদ এনকাউন্টারে কমিশন গঠনের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের।
হায়দরাবাদ-এনকাউন্টার মামলায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করল সুপ্রিম কোর্ট। তিন সদস্যের ওই কমিশনের নেতৃত্ব দেবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ভি এস সিরপুরকর। ছ’মাসের মধ্যে কমিশনকে শীর্ষ আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। ওই কমিশনের অপর দুই সদস্য হলেন বম্বে হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রেখা সুন্দর বলদোতা ও সিবিআইয়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর ডি আর কার্তিকেয়ন।
হায়দরাবাদ-এনকাউন্টারে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পৃথক ভাবে দু’টি জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। তার ভিত্তিতে শীর্ষ আদালতে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে আজ এনকাউন্টার মামলার শুনানি হয়। বেঞ্চের বক্তব্য, ‘‘ওই এনকাউন্টার নিয়ে পরস্পরবিরোধী এত রকম বক্তব্য শোনা যাচ্ছে যে প্রকৃত তথ্য সামনে আসা প্রয়োজন।’’ এনকাউন্টার নিয়ে তেলঙ্গানা হাইকোর্ট ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে যে শুনানি চলছে তা স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বেঞ্চে জানিয়েছে, এই মামলায় সিট এত দিন যে তদন্ত করেছে, তার রিপোর্ট জমা দিক। সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী নির্দেশের আগে তিন সদস্যের কমিশন ছাড়া অন্য কেউ এই মামলার তদন্ত করতে পারবে না। এই নিয়ে তেলঙ্গানা হাইকোর্টে চলা জনস্বার্থ মামলার শুনানি আজ স্থগিত রাখা হয়। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের তিন সদস্যের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে সিআরপিএফ।
তেলঙ্গানা সরকারের আইনজীবী মুকুল রোহতগি সুপ্রিম কোর্টে জানান, কমিশনার পর্যায়ের এক অফিসারের নেতৃত্বে ঘটনার তদন্ত করছে বিশেষ তদন্তকারী দল। ওই যুক্তি খারিজ করে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এমন একটি ‘বিতর্কিত’ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত।
গত ৬ ডিসেম্বর হায়দরাবাদের তরুণী পশু-চিকিৎসককে গণধর্ষণ করে পুড়িয়ে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তেরা পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে নিহত হয়েছিল। পুলিশ দাবি করে, অভিযুক্তেরা পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্র কেড়ে নিয়ে হামলার চেষ্টা করে, আত্মরক্ষার্থে গুলি করে পুলিশ। যার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ‘‘সরকারের (তেলঙ্গানা) বক্তব্যের এমন অনেক দিক রয়েছে যা নিয়ে তদন্তের প্রয়োজন।’’
এনকাউন্টারে নিহতদের দেহ ১৩ ডিসেম্বর অর্থাৎ আগামিকাল পর্যন্ত সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছিল তেলঙ্গানা হাইকোর্ট। আজ আদালতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানিয়েছেন, দেহগুলি সংরক্ষণে রাজ্য আগ্রহী নয়। হাইকোর্ট চায়, দেহগুলি নিয়ে কী করা হবে সে বিষয়ে নির্দেশ দিক সুপ্রিম কোর্ট। যদিও আজ শীর্ষ আদালত কিছু বলেনি। এই ধরনের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্তে সহযোগিতা চেয়ে সংবাদমাধ্যম ও প্রেস কাউন্সিলের কাছে নোটিস পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বলা হয়েছে, সংবাদমাধ্যম যেন ভারসাম্য বজায় রেখে খবর প্রচার করে।