Burqa Row

‘তিলক বা টিপ নয় কেন?’ মুম্বইয়ের কলেজে হিজাবে নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশ দিয়ে প্রশ্ন কোর্টে

কর্তৃপক্ষের জারি করা নোটিসে বলা হয়েছিল, ক্যাম্পাসে থাকাকালীন শিক্ষার্থীরা এমন কোনও পোশাক পরতে পরবেন না, যাতে তাঁর ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ পায় বা সাংস্কৃতিক বৈষম্য চোখে পড়ে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৪ ১৭:১৮
Share:

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

যে কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের তাঁদের পছন্দমতো পোশাক পরার অধিকার রয়েছে। মুম্বইয়ের দু’টি কলেজে বোরখা এবং হিজাব পরায় নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত মামলার পর্যবেক্ষণে শুক্রবার এ কথা বলল সুপ্রিম কোর্ট, পাশাপাশি, আদালত এ-ও প্রশ্ন তোলে, হিজাব নিষেধ করা হলে, কলেজে টিপ বা তিলক পরার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা নয় কেন?

Advertisement

হিজাব, বোরখা, নকাব, টুপি-সহ ধর্মীয় পরিচয়বাহী কোনও পোশাক পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা যাবে না বলে মাসখানেক আগে নির্দেশিকা জারি করেছিল মুম্বইয়ের একটি কলেজ। শুক্রবার সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি, বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ সংশ্লিষ্ট দুই কলেজের পরিচালন সংস্থা ‘চেম্বুর ট্রম্বে এডুকেশন সোসাইটি’-কে নোটিস পাঠিয়ে ওই নির্দেশিকা জারির কৈফিয়ত চেয়েছে।

দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী ১৮ নভেম্বরের মধ্যে বোরখা-নিষেধাজ্ঞার কারণ জানাতে হবে। প্রসঙ্গত, এই বিষয়টি নিয়ে বম্বে হাই কোর্টেও মামলা দায়ের হয়েছিল। কিন্তু মামলা খারিজ করে দিয়ে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, এমন নির্দেশ পড়ুয়াদের মৌলিক অধিকার খর্ব করে না। এ বার তার বিরুদ্ধে আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং মনোজ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করেছিল।

Advertisement

গত জুন মাসে চেম্বুরের আচার্য ও ডিকে মরাঠে কলেজের কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের জন্য পোশাকবিধি নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। কর্তৃপক্ষের জারি করা নোটিসে বলা হয়েছিল, ‘‘ক্যাম্পাসে থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের অবশ্যই শালীন পোশাক পরতে হবে। ছাত্রেরা হাফ শার্ট বা ফুল শার্ট এবং ট্রাউজ়ার পরতে পারেন। মেয়েরা পরতে পারেন ভারতীয় এবং পাশ্চাত্য পোশাক। তবে শিক্ষার্থীরা এমন কোনও পোশাক পরতে পরবেন না, যাতে তাঁর ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ পায় বা সাংস্কৃতিক বৈষম্য চোখে পড়ে। ক্যাম্পাসে হিজাব, বোরখা, টুপি বা ওই জাতীয় পোশাক অনুমোদিত নয়। পরা যাবে না ছেঁড়া জিন্‌স, টি-শার্ট কিংবা জার্সিও।’’ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভ ফেটে পড়ে পড়ুয়াদের একাংশ। বিষয়টি নিয়ে বম্বে হাই কোর্টে মামলাও দায়ের হয়। তবে হাইকোর্ট এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি কর্নাটকের উদুপির একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কয়েক জন হিজাব পরিহিত পড়ুয়াকে ক্লাসে বসতে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। কলেজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি তথা স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক রঘুপতি ভট্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হিজাব পরিহিতরা ক্লাসে ঢুকতে পারবেন না। সেই বিতর্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে রাজ্য জুড়ে। হিজাবের পাল্টা হিসেবে গেরুয়া উত্তরীয় পরে আন্দোলন শুরু করে একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। পরিস্থিতি বুঝে কয়েকটি জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয় অনির্দিষ্ট কালের জন্য। সে বারও হিজাব বিতর্কের রেশ গড়িয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। সেই মামলা এখনও শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement