মুসলিমদের বহুবিবাহ ও নিকাহ্ হালালা প্রথার সাংবিধানিক বৈধতা খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক, কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রক এবং জাতীয় মহিলা কমিশনের বক্তব্য জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট।
সাত মাস আগে সুপ্রিম কোর্ট তাৎক্ষণিক তালাক নিষিদ্ধ করেছে। ওই সময়েই নিকাহ্ হালালা এবং বহুবিবাহ নিয়ে ফয়সালার জন্য দরজা খুলে রেখেছিল শীর্ষ আদালত। আজ এ নিয়ে একাধিক জনস্বার্থ মামলা শুনতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চ জানিয়েছে, নতুন করে পাঁচ সদস্যের একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করে মুসলিমদের বহুবিবাহ ও নিকাহ্ হালালা প্রথা নিয়ে ফয়সালা করা হবে।
এক জন মুসলিম পুরুষ চারটি বিয়ে করার সুযোগ পেয়ে থাকেন। আর নিকাহ্ হালালা প্রথা অনুযায়ী, তালাকপ্রাপ্ত কোনও মহিলা তাঁর প্রাক্তন স্বামীকে ফের বিয়ে করতে চাইলে প্রথমে তাঁকে অন্য কাউকে বিয়ে ও সহবাস করে ফের তালাক নিতে হয়। শীর্ষ আদালতে আবেদনকারীদের যুক্তি, এই প্রথাগুলি অসাংবিধানিক এবং মুসলিম মহিলাদের সম্মান এবং তাঁদের মৌলিক অধিকারের বিরোধী।
আরও পড়ুন: সনিয়ার সঙ্গে মমতার বৈঠক এ বার হচ্ছে না
নিকাহ্ হালালা ও বহুবিবাহ বন্ধ করার আর্জি নিয়ে গত ১৪ মার্চ শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দিল্লির বাসিন্দা নাফিসা খান। তাঁর অভিযোগ, এই সব প্রথার জন্য তিনি নিজেও ভুক্তভোগী। পণের দাবিতে তাঁর স্বামী তাঁকে অত্যাচার করেছে এবং দু’বার বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। এর পরে
তাঁকে ডিভোর্স না করেই অন্য এক মহিলাকে বিয়েও করেছে তাঁর স্বামী। তিনি এফআইআর করতে চেয়েছিলেন স্বামীর বিরুদ্ধে, কিন্তু পুলিশ তা নিতে অস্বীকার করেছে। পুলিশ জানায়, শরিয়ত আইন অনুযায়ী বহুবিবাহ বৈধ।
শুধু নাফিসাই নন, দিল্লি বিজেপির নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়, সামিরা বেগম নামে আর এক ভুক্তভোগী মহিলা এবং তেলঙ্গানার এক আইনজীবী ও সমাজকর্মী এই প্রথার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। উপাধ্যায়ের যুক্তি, মুসলিম ব্যক্তিগত আইনের এই সংক্রান্ত ধারা অসাংবিধানিক এবং সংবিধানের ১৪, ১৫ ও ২১ নম্বর অনুচ্ছেদের বিরোধী।
গত বছর ২২ অগস্ট সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ ১৪০০ বছরের পুরনো তাৎক্ষণিক তিন তালাকের প্রথাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই প্রথা কোরান এবং শরিয়ত আইনের বিরোধী বলেই আখ্যা দিয়েছে কোর্ট।