মেঘালয়ের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক
বেশ কয়েক দিন ধরেই তিনি বেসুরো। যে বিজেপি সরকার তাঁকে রাজ্যপাল পদে বসিয়েছে, তার প্রকাশ্য সমালোচনা করে চলেছেন নিরন্তর। মেঘালয়ের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের সোমবারের নিশানাও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
আজ সত্যপাল মন্তব্য করেন, “একটা কুকুর মারা গেলেও শোক প্রকাশ করেন তাঁরা। কেন্দ্রের কৃষি আইনের প্রতিবাদে আন্দোলন চালানো কৃষকদের ৬০০ জন মারা গেলেও পরোয়া নেই তাঁদের!” প্রাক্তন বিজেপি নেতা মালিক এর পরে বলেছেন, বিজেপির মধ্যেও আন্দোলনকারী কৃষকদের সমর্থক অনেকে আছেন। কিন্তু ‘দু-এক জন উদ্ধত লোকের কারণে’ তাঁরা চুপ করে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। মালিক নাম না-করলেও এই দু-এক জন যে ‘নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ’, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। তাই যোগ করেছেন, “আমাকে রাজ্যপাল পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বললেও আমি পরোয়া করি না। সত্যটা বলেই যাব!”
এর আগে গোয়ায় রাজ্যপাল ছিলেন সত্যপাল। রাজ্যের মর্যাদা চলে যাওয়া জম্মু ও কাশ্মীরেরও রাজ্যপাল ছিলেন। বস্তুত কেন্দ্র সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের সময়ে মালিকই রাজ্যপাল ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরে। মোদী-শাহের এমন ভরসার লোক কেন এ ভাবে বিগড়ে গেলেন, সে প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন অনেকে। সোমবার তিনি বলেন, “শিখদের বিগড়ে দিলে কী হয়, ইন্দিরা গাঁধী প্রাণ দিয়ে সেটা বুঝেছেন। এখানকার নেতারাও সেই শিক্ষা নিন।”
রাজনৈতিক জীবনে দলবদলু হিসেবে পরিচিতি ছিল মালিকের। জনতা পার্টির সাংসদ হয়েছিলেন আলিগড় থেকে। তার পরে এসপি, কংগ্রেস, ভারতীয় ক্রান্তি দল হয়ে শেষে ভিড়েছিলেন বিজেপিতে। মেঘালয়ের মতো আপাত গুরুত্বহীন রাজ্যের রাজ্যপাল করার পরে তিনি হয়তো বুঝে গিয়েছেন, বিজেপিতে তাঁরও হাল হবে তথাগত রায়ের মতো। সুতরাং রাজ্যপাল পদ থেকে সরিয়ে দিলে তিনি যোগ দিতে পারেন কোনও অ-বিজেপি দলে। অনেকের ধারণা, বিজেপি নেতৃত্বকে নিরন্তর বিঁধে সেই পথই পরিষ্কার করছেন উত্তরপ্রদেশের জাঠ রাজনীতিক সত্যপাল।