সঞ্জীব সান্যাল। —ফাইল চিত্র।
সত্তর বছর আগে, ১৯৫৪ সালের জুলাই মাসে ভাকরা-নাঙ্গাল বাঁধের উদ্বোধনী বক্তৃতায় দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু বলেছিলেন, স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে বড় মন্দির, মসজিদ, গির্জা হল এই বিশাল জলাধার, নতুন পরিকাঠামোগুলি। যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁদের রক্ত, ঘাম ঝরাচ্ছেন। রামমন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে দেশজোড়া বিশাল কর্মকাণ্ডের মধ্যেই মন্দির উদ্বোধনের দু’দিন আগে তৃণমূল নেতৃত্ব নেহরুর এই আপ্তবাক্যটিকে তুলে এনে মোদী সরকারকে নিশানা করলেন। বক্তব্য, গত দশ বছরে পরিকাঠামো নির্মাণের মান দুর্বল হয়েছে, বিলম্ব ঘটেছে। কিন্তু মোদী সরকারে মন রয়েছে অন্যত্র! দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন আজ দেশের সড়ক, সুড়ঙ্গ, রেল, সেতু এবং উড়ালপুলের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে মোদী সরকারের ব্যর্থতাগুলি চিহ্নিত করেছেন।
অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সঞ্জীব সান্যাল আজই একটি নিবন্ধে নেহরুর ‘আধুনিক ভারতের মন্দির’ সংক্রান্ত বক্তব্যটি উল্লেখ করে বলেছেন, মন্দিরের মতো দেশের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকার আসলে অর্থনৈতিক সম্পদ। বোঝা নয়। অযোধ্যার রামমন্দিরকে কেন্দ্র করে যে বিপুল বিনিয়োগ এবং পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে, তা দেশকে অর্থনৈতিক ভাবে চাঙ্গা করবে বলেই মত সঞ্জীবের। তিনি লিখেছেন, ‘‘একটি টাটকা বিমানবন্দর, রেল স্টেশন, বিভিন্ন শ্রেণির হোটেল, রিং রোড তৈরি হয়েছে রামমন্দিরকে উপলক্ষ করে। এসেছে বিপুল বিনিয়োগ। অযোধ্যার এই বিনিয়োগ পূর্ব এবং মধ্য উত্তরপ্রদেশের অর্থনীতিতে আলোড়ন তৈরি করেছে।’’
আজ ডেরেক তাঁর ব্লগে দেশের সড়ক ব্যবস্থা নিয়ে লিখেছেন, ‘২০২৩ সালে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটি, প্রধানমন্ত্রী গ্রামীন সড়ক যোজনার বিলম্ব এবং খারাপ নির্মাণের নিন্দা করেছিল। কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সমস্ত গ্রামীণ এলাকার সঙ্গে স্কুল, হাসপাতাল, শব্জি বাজারের সঙ্গে রাস্তাকে সংযুক্ত করা হবে। অথচ এখনও ৫০হাজার কিলোমিটারের মতো রাস্তা তৈরি করা বাকি রয়েছে।’ ডেরেক উল্লেখ করেছেন সাম্প্রতিক উত্তরকাশীর টানেলে ১৭ দিন ধরে আটকে থাকা মঞ্জিত লালের কথা, যাঁর ভাইয়ের ২০২২ সালে মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছিল মহারাষ্ট্রের একটি নির্মাণকাজের স্থলে। গুজরাতের মোরবি সেতু ভেঙে পড়ে ১৩৫ জনের মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়েছেন তৃণমূলের এই নেতা। তাঁর কথায়, ‘এ রকম দুর্বল পরিকাঠমোর বহু উদাহরণ রয়েছে যার কবলে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। ২০২৩ সালে অন্তত ১৫টি বড় রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। সিএজি তার রিপোর্টে উল্লেখ করেছে বাধ্যতামূলক ট্র্যাক পরিদর্শনের কাজ ৫০ শতাংশ পড়ে রয়েছে।’