সচিন পাইলট। ফাইল চিত্র
মোদী সরকারের মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের বিরুদ্ধে আগেই কংগ্রেসের বিধায়কদের টাকা দিয়ে কেনার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল। রাজস্থান পুলিশের তদন্তকারী দল আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বয়ান রেকর্ড করতে চেয়ে তাঁকে নোটিসও পাঠিয়েছে। এ বার অভিযোগ উঠল, ‘বিদ্রোহী’ কংগ্রেস নেতা সচিন পাইলট নিজেই তাঁর দলের বিধায়ককে সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য ৩৫ কোটি টাকা ‘অফার’ করেছিলেন।
রাজস্থানের কংগ্রেস বিধায়ক গিরিরাজ সিংহ মলিঙ্গা আজ অভিযোগ করেছেন, সচিন তাঁকে ৩৫ কোটি টাকার বিনিময়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এর আগে কংগ্রেসের বিধায়কদের সঙ্গে টাকার লেনদেন নিয়ে ফোনে কথার অডিয়ো-টেপের ভিত্তিতে শেখাওয়াতের দিকে টাকার প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পুলিশের নোটিস পেয়ে আজ শেখাওয়াতের প্রশ্ন, কে এই ফোনে আড়ি পাতার অনুমতি দিয়েছিল?
বিজেপি আগেই ফোনে আড়ি পাতায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে। অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও রাজস্থান সরকারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছিল। আজ রাজস্থান সরকার সিবিআই তদন্তের সার্বিক অনুমতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এখন সিবিআইয়ের যে কোনও পদক্ষেপের আগে রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে।
সচিনের বিরুদ্ধে গিরিরাজের অভিযোগের পর রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত বলেন, “আমি যখন বলতাম সরকার ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে, কেউ বিশ্বাস করত না।” সচিনকে ‘নিষ্কর্মা’ ও ‘অপদার্থ’ বলে আক্রমণ করে গহলৌত বলেন, “আমি জানতাম উনি কোনও কাজ করেন না। তা সত্বেও কখনও ওঁকে প্রদেশ
কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরানোর দাবি তুলিনি। সচিনকে কংগ্রেস কম বয়সে কত কিছু দিয়েছে। সনিয়া-রাহুল গাঁধী বিশ্বাস করেছেন। কিন্তু উনি কংগ্রেসের পিঠে ছুরি মেরেছেন। জীবনে শুনিনি কোনও দলের সভাপতি নিজের দলের সরকার ফেলার চেষ্টা করছেন।” সচিনের ‘মাসুম চেহরা’ দেখে কিছু বোঝা যায় না বলেও মন্তব্য করেন গহলৌত।
ভূপেশ বাঘেলের মতো কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, সচিন আসলে তাঁর শ্বশুরমশাই ফারুখ আবদুল্লা ও শ্যালক ওমর আবদুল্লার মুক্তির জন্য বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। ফারুখের কন্যা সারা সচিনের স্ত্রী। ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর থেকেই ফারুখ-ওমর গৃহবন্দি ছিলেন।
ওমরের যুক্তি, এ সব অভিযোগে তিনি বিরক্ত। কংগ্রেস নেতাদের আইনি নোটিস পাঠাবেন। সচিনের দাবি, এর সবটাই বানানো। তাঁকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা। মুখ্যমন্ত্রীর কাজকর্ম নিয়ে তিনি যে সব অভিযোগ তুলেছেন, তা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা। তবে এ সব শুনে দুঃখিত হলেও তিনি অবাক হননি।
সচিন ও তাঁর অনুগামী মিলিয়ে মোট ১৮ জন কংগ্রেস নেতার বিধায়ক পদ খারিজের দাবির ভিত্তিতে স্পিকার তাঁদের নোটিস পাঠিয়েছিলেন। এর বিরুদ্ধে রাজস্থান হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে সচিনের আইনজীবী হরিশ সালভে যুক্তি দিয়েছেন, সচিন দলের মধ্যে বিরুদ্ধ-স্বর তুলেছেন। অন্য কোনও দলকে সমর্থন করেননি। স্পিকার কোনও পদক্ষেপ করতে পারেন না। মঙ্গলবারও শুনানি চলবে।
গহলৌতের প্রশ্ন, “লন্ডনে বসে সচিনের হয়ে সওয়াল করছেন সালভে। এত টাকা কে জোগাচ্ছে?”
আরও পড়ুন: ভূরি ভূরি মামলা থাকা সত্ত্বেও বার বার জামিন কেন বিকাশ দুবেকে, আদালতে প্রশ্নের মুখে যোগী