সচিন পাইলট। -ফাইল ছবি।
কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে রাহুল গাঁধী গত বছর পদত্যাগ করার পর থেকেই অশোক গহলৌত আর এআইসিসি-তে থাকা তাঁর অনুগামীরা নানা ভাবে তাঁকে অপমান করে চলেছিলেন। ‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই অভিযোগ করলেন রাজস্থানের উপ-মুখ্যমন্ত্রিত্ব ও প্রদেশ সভাপতির পদ থেকে মঙ্গলবার অপসারিত সচিন পাইলট। এও জানালেন, বিজেপিতে তিনি যাচ্ছেন না।
সচিন বলেছেন, ‘‘রাহুল গাঁধী সরে যাওয়ার পর থেকেই দলে ও রাজস্থান সরকারে আমার আত্মসম্মান বজায় রেখে চলাটা মুশকিল হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। তবে ভোটে অনেক পরিশ্রম করেই কংগ্রসকে ক্ষমতায় এনেছিলাম। তাই বিজেপিতে যাব কেন?’’
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সচিন বলেছেন, ‘‘আমার কারও উপর রাগ নেই। আমি কোনও বিশেষ ক্ষমতা বা সুবিধা চাইছি না। আমি শুধু একটা জিনিসই চেয়েছিলাম। সেটা হল, বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে গিয়ে কংগ্রেস যে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, গহলৌত সরকার যেন সেগুলি রক্ষা করে। সেই সব প্রতিশ্রুতিগুলি রক্ষার লক্ষ্যে যেন আন্তরিক ভাবে সচেষ্ট হয়।’’
সচিনের স্পষ্ট অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী গহলৌত ও তাঁর অনুগামীরা তাঁকে রাজস্থানের উন্নয়নে কাজ করতে বাধা দিয়ে গিয়েছেন। তাঁকে কোনও কাজের সুযোগই দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: বিধায়ক আত্মঘাতী, ইঙ্গিত পোস্টমর্টেমে, জানালেন স্বরাষ্ট্রসচিব
আরও পড়ুন: নেপালের মানচিত্রে এ বার রামজন্মভূমিকেও ঢুকিয়ে ফেললেন ওলি
সচিনের কথায়, ‘‘উনি (গহলৌত) আমাকে আত্মসম্মান নিয়ে কাজ করতে দেননি। রাজস্থানের উন্নয়নে কোনও কাজই করতে দেননি। আমার নির্দেশ অগ্রাহ্য করতে বলা হত আমলাদের। কোনও সরকারি ফাইলই আমার কাছে পাঠানো হত না। মাসের পর মাস কোনও বৈঠক হয়নি রাজ্য মন্ত্রিসভার। কংগ্রেস পরিষদীয় দলেরও। মানুষের উন্নয়নে যদি কাজই না করতে পারি, তা হলে শুধুই পদ আঁকড়ে থেকে কী লাভ?’’
তবে এই বিষয়গুলি যে তিনি মুখ বুঁজে সহ্য করেছিলেন, তা নয়। সচিন জানিয়েছেন, রাজস্থানে যিনি এইআইসিসি-র তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাঁকে বেশ কয়েক বার তাঁর ক্ষোভ, অসন্তোষের কথা তিনি জানিয়েছিলেন। আমি দলের প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছি। একান্তে আলোচনা করেছি মুখ্যমন্ত্রী গহলৌতের সঙ্গেও। কিন্তু মাসের পর মাস, মন্ত্রী, বিধায়কদের কোনও বৈঠকই হত না। তাই আমার ক্ষোভ, অসন্তোষের বিষয়গুলি নিয়ে সকলের সঙ্গে আলোচনা, বিতর্কের অবকাশই থাকতো না।
তিনিও বিজেপির ‘পুতুল’ বনে গিয়েছেন কি না এই প্রশ্নের জবাবে সচিন বলেছেন, ‘‘এই অভিযোগের সত্যতা নেই বিন্দুমাত্র। কংগ্রেসকে রাজস্থানে জেতাতে আমি কম পরিশ্রম করিনি। তা হলে আমার দলের বিরুদ্ধে আমি কাজ করতে যাব কেন? যাঁরা রটাচ্ছেন, আমি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি, তাঁরা আমার ভাবমূর্তি কলঙ্কিত করতেই এই সব বলে বেড়াচ্ছেন। নানা রকমের উস্কানি থাকলেও আমি দলের বিরুদ্ধে একটাও কথা বলিনি।’’