শবরীমালায় পুণ্যার্থীরা। শনিবার। পিটিআই
শবরীমালা মন্দিরে ওঠার ৫ কিলোমিটার আগে বেস ক্যাম্পেই আটকে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। বেস ক্যাম্প থেকে কিছুটা দূরে নিজের গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন পদ্মাবতী। অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে কেরলে পৌঁছে পম্পা অবধি গিয়েও আয়াপ্পা মন্দিরে পুজো দেওয়া হল না তাঁর। সুপ্রিম কোর্ট সব বয়সের মহিলাদের শবরীমালা মন্দিরে ঢোকার ব্যাপারে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিলেও ‘বয়সে’র কারণ দেখিয়ে তাঁকে শবরীমালা মন্দিরে উঠতে মানা করেছেন কেরল পুলিশের মহিলা আধিকারিকেরা। সমস্যা বাড়াতে চাননি বলে নিষেধ মেনে নেমে এসেছেন পদ্মাবতী।
একা পদ্মাবতী নন। তাঁর মতো অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসা আরও ৯ জন মহিলাকে পম্পা থেকেই আটকে দিয়েছে কেরলের পুলিশ। ক্ষুব্ধ মহিলারা বলছেন, ‘‘আমরা জানতাম, আদালত গত বছরই মন্দিরে ঢোকার ব্যাপারে সব বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে। এটা বললামও। কিন্তু পুলিশ কিছুই বলল না!’’
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শনিবার থেকে ফের খুলেছে শবরীমালা মন্দির। আর তখনই চোখে পড়েছে রাজ্যের বাম সরকারের অবস্থান বদলের বিষয়টি। গত বছর সুপ্রিম কোর্ট শবরীমালায় সব বয়সি মহিলার প্রবেশের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরে সেই রায় কার্যকর করতে সক্রিয় হয়েছিল বাম সরকার। ‘ধর্মীয় বিশ্বাসের’ প্রশ্ন তুলে দক্ষিণপন্থী ও বিজেপি সমর্থকেরা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরব হলেও কেরল সরকার মহিলাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এ বারে ছবিটা বদলে গিয়েছে। গত কালই সরকারের দেবস্বম মন্ত্রী কড়কমপল্লি সুরেন্দ্রন জানিয়েছিলেন, কোনও মহিলা শবরীমালা মন্দিরে পুজো দিতে যেতে চাইলে রাজ্য সরকার এ বারে আর তাঁকে পুলিশি সহায়তা দেবে না। তিনি জানিয়েছিলেন, কেউ যদি মনে করেন পুলিশি নিরাপত্তা দরকার, তা হলে তাঁকে আদালতে গিয়ে নির্দেশ নিয়ে আসতে হবে।
বামশাসিত কেরলে পুলিশ ও সরকারের মনোভাবে হতাশ অনেকে বলছেন, হিন্দুত্ববাদী শক্তির কাছে মাথা নুইয়েছে পিনারাই বিজয়নের সরকার। মহিলা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের কর্মী ত্রুপ্তি দেশাই জানিয়েছেন, গত কালই কেরল সরকার জানিয়েছিল, মহিলাদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে না। কেরল সরকার নিরাপত্তা দিক বা না-দিক, আমি ২০ নভেম্বরের পরে শবরীমালা মন্দিরে পুজো দিতে যাব। ’’