বৃহত্তর বেঞ্চে গেল শবরীমালা মামলা। —ফাইল চিত্র
ঐকমত্য হননি বিচারপতিরা। তাই, শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার মামলা এ বার গেল বৃহত্তর বেঞ্চে। বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।
গত বছর একটি ঐতিহাসিক রায়ে কেরলের শবরীমালার আয়াপ্পার মন্দিরে সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশ করার অধিকার দেয় সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, সেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য অন্তত ৬০টি আবেদন জমা পড়েছিল শীর্ষ আদালতে। এ সম্পর্কে এ দিন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আবেদনকারীদের চেষ্টা ছিল, ধর্ম এবং বিশ্বাস নিয়ে একটি বিতর্ক উস্কে দেওয়া।’’ মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে কিছু দিন আগেই তোলপাড় হয়েছিল কেরল। ছড়িয়েছিল হিংসাও। আর তার আঁচ গিয়ে পড়েছিল গোটা দেশেও। ফলে, এ দিন শবরীমালার রায় নিয়ে গোটা দেশ জুড়েই আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, পাঁচ বিচারপতি সহমত হতে পারেননি। তাই, ওই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য সাত বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। এ দিন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘সব পক্ষকেই নতুন করে সুযোগ দেওয়া হল।’’ সেই সঙ্গে শীর্ষ আদালত এও জানিয়েছে, শুধুমাত্র শবরীমালা মন্দিরই নয়, অন্য ধর্মের উপাসনা স্থানে মহিলাদের প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
শীর্ষ আদালত মামলা বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানোয় মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশের বিষয়টি অমীমাংসিতই থেকে গেল। ফলে, নতুন প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে কেরলের বিরোধীরা। তাদের দাবি, বৃহত্তর বেঞ্চে মামলা পাঠানোর অর্থ এখনও রায় ঘোষণা হয়নি। এই সূত্র ধরেই কংগ্রেস নেতা রমেশ চেন্নিথালা দাবি তুলেছেন, ‘‘সরকারের উচিত কম বয়সী মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশে নিষেধ করা।’’ কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের মন্তব্য, ‘‘শবরীমালা একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্দির। আমরা আশা করব, কেরল সরকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করবে।’’ কেরল সরকার আইন শৃঙ্খলা মেনে চলবে বলে জানিয়েছেন কেরলের স্বাস্থ্য ও সমাজ কল্যাণমন্ত্রী কে কে শৈলজা।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরি যুবকদের সন্ত্রাসের প্রশিক্ষণ পাকিস্তানেই, মানলেন মুশারফ
আরও পড়ুন: বাবার সরকারি চাকরি পেতে তাঁকে খুন করল ছেলে!
কেরলের শবরীমালা মন্দিরে আয়াপ্পার পুজো দেওয়ার জন্য ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলাদের প্রবেশে বহু দিন ধরেই নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। কিন্তু, গত বছরই একটি ঐতিহাসিক রায়ে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয় যে কোনও বয়সের মহিলারাই আয়াপ্পার মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন। শীর্ষ আদালত এও জানিয়ে দেয়, ‘‘বিধিনিষেধকে কখনওই ধর্মীয় প্রথার অংশ হিসেবে তুলে ধরা যায় না।’’ এমন প্রথা অস্পৃশ্যতাকে তুলে ধরে বলেও মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট।