বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
জি২০ শীর্ষ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গোটা দেশে বছরভর এই রাজসূয় অনুষ্ঠানকে মানুষের আন্দোলন হিসাবে বিজ্ঞাপিত করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। কংগ্রেসকে নিশানা করে আজ তাঁর বক্তব্য, আগের সরকার লাটিয়েন্স দিল্লি আর বিজ্ঞান ভবনেই স্বচ্ছন্দ ছিল। কিন্তু মোদী সরকারের মানসিকতা অনেক বেশি গণতান্ত্রিক। জি২০-কে দেশে ছড়িয়ে দিয়ে বহু মানুষকে এর অংশীদার করা হয়েছে। জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের ইতিহাসকে তুলে পাল্টা নিশানা করতে ছাড়েনি কংগ্রেসও।
চলতি সপ্তাহেই দিল্লিতে বসতে চলেছে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন। এই সম্মেলনের আয়োজনকে তাঁর সরকারের অন্যতম সাফল্য হিসেবে প্রচার শুরু করে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। জি২০-কে গণআন্দোলন আখ্যা গিয়ে জয়শঙ্করের বক্তব্য, “এটা প্রধানমন্ত্রী মোদীর মানসিকতা, বিজেপি-র মানসিকতা, সরকারের মানসিকতা। অনেক বেশি গণতান্ত্রিক মানসিকতার প্রতিফলন, যেখানে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে একটি শহর সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করবে— সেই দিন আর নেই।”
পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি কংগ্রেস। দলের অন্যতম মুখপাত্র জয়রাম রমেশ ১৯৮৩ সালের জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের উদাহরণ দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘কংগ্রেস বিষয়টিকে নিজেদের প্রচারের অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করেনি। এখানে মোদী যা করছেন তা হল নিজের ঢাক পেটানো।’’ কংগ্রেসকে নিশানা করে বিদেশমন্ত্রীর জবাব, “কেউ যদি ১৯৮৩ সালেই আটকে থাকতে চান, তা হলে তিনি স্বাগত। দেশ অনেক এগিয়ে গিয়েছে! এটা ২০২৩ সাল। এটা অন্য সরকার, অন্য যুগ, অন্য চিন্তাভাবনা। আপনারা শীর্ষ সম্মেলন করেছিলেন যার প্রভাব সম্ভবত বিজ্ঞান ভবনের বাইরে দু কিলোমিটার পর্যন্ত গিয়েছিল! প্রধানমন্ত্রী মোদী মনে করেছেন জি২০-র জন্য সবাই মিলে কাজ করাকে একটি জাতীয় আন্দোলনে পরিণত করতে। দেশের প্রত্যেকটি অংশ যেন তাতে যোগ দিতে পারে। তার মধ্যে যেন কোনও রাজনীতি না থাকে।”
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক নিবন্ধে লিখেছেন, ‘ভারতের কাছে জি২০-র সভাপতিত্ব শুধু উচ্চস্তরীয় কোনও কূটনৈতিক প্রয়াস নয়। গণতন্ত্রের ধাত্রীভূমি এবং বৈচিত্র্যের আদর্শ ভূমি হিসেবে আমরা আমাদের অভিজ্ঞতার দরজা গোটা বিশ্বের সামনে খুলে দিয়েছি’। তাঁর বক্তব্য, ‘আজ বড় মাত্রায় কোনও কাজের কথা ভাবা হলে তার সঙ্গে ভারতের নাম যুক্ত হয়ে যায়। জি২০-র সভাপতিত্বও এর ব্যতিক্রম নয়। এটা এখন এক গণআন্দোলনে পরিণত হয়েছে। দেশজুড়ে ৬০টি শহরে ২০০-রও বেশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। ১২৫টি দেশের প্রায় ১,০০,০০০ প্রতিনিধি এই সব বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। এর আগে অন্য কোনও দেশের সভাপতিত্বে এমন বিপুল ও ভৌগোলিক বৈচিত্র্যপূর্ণ আয়োজন করা হয়নি’।