ঢাকায় জয়শঙ্কর, এপ্রিলে আসছেন হাসিনা

ভারতের বিদেশসচিব এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের পর শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে বলে দাবি করেছে ঢাকা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই সফর দ্বিতীয় বারের মতো বাতিল হয়ে যাওয়ার পরে জয়শঙ্কর এ দিন বেজিং থেকে ঢাকায় আসেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৫
Share:

ভারতের বিদেশসচিব এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের পর শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে বলে দাবি করেছে ঢাকা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই সফর দ্বিতীয় বারের মতো বাতিল হয়ে যাওয়ার পরে জয়শঙ্কর এ দিন বেজিং থেকে ঢাকায় আসেন। বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও বিদেশসচিব শহীদুল হকের উপস্থিতিতে শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেসসচিব নজরুল ইসলাম এর পরে সংক্ষিপ্ত ঘোষণা করেন— এপ্রিলের প্রথমার্ধে প্রধানমন্ত্রী দিল্লি যাচ্ছেন।

Advertisement

তবে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এর আগে ডিসেম্বরে এই সফর হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। সে বার দিন ক্ষণ চূড়ান্ত না-হলেও সেই সফরের খুঁটিনাটি এবং সফরে হতে যাওয়া দ্বিপাক্ষিক চুক্তিগুলির খবরও প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ঢাকা সেই সফর বাতিল করে দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর তখন তড়িঘড়ি ঢাকায় এসে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। এই বৈঠকের পরেও প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছিল, ফেব্রুয়ারির শেষে শেখ হাসিনা দিল্লি যেতে পারেন। কিন্তু সে সফরও হয়নি।

এই মুহূর্তে সব চেয়ে বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন প্রতিবেশী দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বার বার সফর বাতিল করছেন— এ বিষয়টিকে ভারতের কূটনীতির দুর্বলতা বলে অনেকে ব্যাখ্যা করছেন। ২০১৫-য় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঢাকা সফরে গিয়ে যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিলেন, স্থলসীমা চুক্তি ছাড়া কার্যত আর কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি। তিস্তার জলও গড়ায়নি। অথচ তিস্তার জলবণ্টন চুক্তির বিষয়টি ২০১৮-র শেষে হতে যাওয়া নির্বাচনে শেখ হাসিনার কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতেই আটকে আছে এই চুক্তি। ঢাকার অনুযোগ, এই আপত্তি দূর করতে সে ভাবে তৎপর হচ্ছে না দিল্লি। যদিও ঢাকা এখন তিস্তার জলের ভাগের বিষয়টিকে আলাদা করা দেখাতে চাইছে না। সম্প্রতি শেখ হাসিনা বলেন— শুধু তিস্তা নয়, ভারত থেকে বয়ে আসা সব নদীর জলেরই ন্যায্য ভাগ চায় বাংলাদেশে। দিল্লিতে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলিরও কথা— দু’দেশের সম্পর্ক শুধু তিস্তায় আটকে নেই। আটকে থাকবেও না।

Advertisement

ঢাকার এই অবস্থানকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে দিল্লি। শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে দু’দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে যে বোঝাপড়া চুক্তি হওয়ার কথা, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবস্থানগত কারণে চিনও বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারে উঠেপড়ে লেগেছে। সেখানে বিপুল বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বেজিং। হাসিনার দিল্লি সফরের উপর পাকিস্তানও নজর রাখছে। ঢাকার চিন ও পাকিস্তান দূতাবাস সাংবাদিকদের কাছ থেকে শেখ হাসিনার সফরে হতে চলা চুক্তিগুলির খুঁটিনাটি সংগ্রহ করেছে বলে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা খবর পেয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে এপ্রিলের প্রথমার্ধে এই সফরের কথা ঘোষণা করা হলেও তার দিন ক্ষণ জানানো হয়নি। কেন? বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলির জবাব— এই সফর যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই স্পর্শকাতর। তাই এই সাবধানতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement