শীর্ষ আদালতে বাউন্সার রাম জেঠমলানীর

তালাক খারিজে মাঠে নামল সঙ্ঘ-পরিবার

তিন তালাকের বিরুদ্ধে আইনি যুদ্ধে মোদী সরকারের আগেই মাঠে নেমে পড়ল আরএসএস। সুপ্রিম কোর্টে তিন তালাক নিয়ে শুনানিতে আজ আরএসএস—এর শাখা সংগঠন ফ্যানস (ফোরাম ফর অ্যাওয়ারনেস অব ন্যাশনাল সিকিউরিটি)-র হয়ে সওয়াল করলেন প্রবীণ আইনজীবী রাম জেঠমলানী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৭ ০৪:০৯
Share:

তিন তালাকের বিরুদ্ধে আইনি যুদ্ধে মোদী সরকারের আগেই মাঠে নেমে পড়ল আরএসএস।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টে তিন তালাক নিয়ে শুনানিতে আজ আরএসএস—এর শাখা সংগঠন ফ্যানস (ফোরাম ফর অ্যাওয়ারনেস অব ন্যাশনাল সিকিউরিটি)-র হয়ে সওয়াল করলেন প্রবীণ আইনজীবী রাম জেঠমলানী। আর মাঠে নেমেই বুড়ো হাড়ে ভেলকির মতো একের পর এক বাউন্সার ছুড়েছেন ৯৩ বছরের জেঠমলানী। বলেছেন, ‘‘স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শুধুমাত্র স্বামীকে তিন তালাকের অধিকার দেওয়ার অর্থ হল, সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদের সমানাধিকারকে খর্ব করা।’’ তাঁর যুক্তি, কোনও আইন এক জন স্বামীকে তাঁর ইচ্ছেমতো নিজের স্ত্রী-কে এক লহমায় প্রাক্তন স্ত্রী-তে পরিণত করার অধিকার দেয় না। তিন তালাক প্রথা হল অসাংবিধানিক অধিকারের চূড়ান্ত।

মুসলিম সম্প্রদায়ের একাংশের আপত্তি খারিজ করে দীর্ঘদিন ধরেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার দাবি তুলছে সঙ্ঘ-পরিবার। আজ আদালতেও রাখঢাক না করেই জেঠমলানী দাবি তুলেছেন, এখনই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হোক। তিন তালাকের মতো উদ্ধত প্রথায় ইতি টানার এটাই সেরা সময়।

Advertisement

মোদী সরকার যে তালাকের বিরুদ্ধে, কেন্দ্র তা আগে আদালতে জানিয়েছে। সোমবার থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহাতগি তিন তালাকের বিরুদ্ধে সওয়াল শুরু করবেন। আজ সওয়াল-জবাব শেষ করে দেওয়ার মনোভাব নিয়ে

জেঠমলানী যুক্তি দিয়েছেন, তিন তালাক কোরানের মূল ধারারও বিরোধী। এর পক্ষে কোনও যুক্তি, কোনও সওয়াল হতে পারে না। এই ধরনের পাপজনক, অরুচিকর প্রথা সংবিধানের বিরোধী। তিনি বলেন, ‘‘আমি পবিত্র কোরানের মনোযোগী ছাত্র। সব ধর্মেই কিছু সোনা থাকে, কিছু আবর্জনা। কোরানের মূল কথাগুলি সব থেকে সেরা। যার মূল সুর হল, যে জ্ঞানের পথে রয়েছে, সে-ই ঈশ্বরের পথে রয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট আজ আইনজীবীদের কাছে জানতে চায়, কোন ইসলামি দেশে আর কোন অ-ইসলামি দেশে তিন তালাক প্রথা চালু রয়েছে? সৌদি আরবে তিন তালাক চালু রয়েছে কি না! আইনজীবীরা জানিয়েছেন, সৌদি আরবে তিন তালাক প্রথা চালু নেই। তিন তালাকের বিরুদ্ধে মামলাকারীদের আইনজীবী নিত্যা রামাকৃষ্ণণ বলেন, তালাক-এর দু’টি প্রথা। তালাক-এ-সুন্নত ও তালাক-এ-বিদ্দাত। তালাক-এ-সুন্নত-এর ক্ষেত্রে তা ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য তিন মাসের সময় থাকে। এর দু’টি ভাগ, তালাক-এ-এহসান ও তালাক-এ হাসন। এর মধ্যেও তালাক-এ-এহসান বেশি গ্রহণযোগ্য। কারণ সেখানে একবারই তালাক বলতে হয়। কিন্তু পরের তিন মাস সময়ে খরপোশ, মিটমাটের সময় থাকে। প্রয়োজনে তালাক ফিরিয়েও নেওয়া যায়। কিন্তু তালাক-এ-হাসন-এর ক্ষেত্রে পরপর তিন মাসে তিনবার তালাক বলতে হয়। কিন্তু তালাক-এ-বিদ্দাতে একবারে তিন তালাক বলে দিতে হয়। এ’টি একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement