প্রতীকী ছবি।
চিনের প্রেসিডেন্ট তথা চিনা কমিউনিস্ট পার্টিকে তুলোধনা করল আরএসএস তথা সঙ্ঘ পরিবার। সম্প্রতি তাদের মুখপত্র ‘অর্গানাইজার’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি নিবন্ধে চিনের ‘খুনে আদর্শ’ এবং ‘সম্প্রসারণবাদের’ তীব্র নিন্দা করে কার্যত নরেন্দ্র মোদী সরকারকেও বার্তা দিল আরএসএস, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
প্রধানমন্ত্রীর পদে বসার পর থেকে নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর সরকারের চিনের সঙ্গে হৃদ্যতার প্রকাশ্য প্রচারকে খুব ভাল নজরে দেখেনি সঙ্ঘ পরিবার। সূত্রের মতে, একাধিক বার এ বিষয়ে সতর্কও করা হয়েছে বিজেপি নেতৃত্বকে। কিন্তু মহাশক্তিশালী এই প্রতিবেশীকে এড়িয়ে নিজের বিদেশনীতিকে পরিচালিত করার কৌশল উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়নি মোদীর পক্ষে। বরং বিদেশমন্ত্রী তথা পূর্বতন বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর, বারবার বলে গিয়েছেন চিনকে সঙ্গে নিয়ে চলাতেই ভারতের মঙ্গল। মোদীও চিনকে ঘরোয়া সংলাপে আমন্ত্রণ করে কূটনীতির বহু সুখদৃশ্য তৈরি করার চেষ্টা করে গিয়েছেন লাগাতার।
গত বছর গালওয়ান কাণ্ডের পর থেকে দৃশ্যতই সুর বদলাতে দেখা গিয়েছে নয়াদিল্লির। এক বছর অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরেও চিনা সেনা ভারতের ভূখণ্ড থেকে পুরোপুরি পিছু না হঠায় এত দিনে হতাশার স্বর শোনা যাচ্ছে জয়শঙ্করের কণ্ঠে। এই পরিস্থিতিতে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির উপর খড়্গহস্ত হল আরএসএস। অর্গানাইজার-এর একটি নিবন্ধে তীব্র আক্রমণ করা হয়েছে চিনা কমিউনিস্ট পার্টিকে। তার ‘সম্প্রসারণবাদের’ অতীত ঐতিহ্যের কথাও তুলে ধরা হয়েছে। তিয়েন আন মেন স্কোয়ার-এর ঘটনা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, কমিউনিস্ট পার্টি নিজ দেশের মানুষের প্রতিও একই রকম নির্দয়। করোনা ভাইরাস গোটা বিশ্বে ছড়ানোর জন্য চিনকে দায়ী করে কার্যত বিজেপি সরকারের কাছেও বার্তা দিতে চেয়েছে সঙ্ঘ নেতৃত্ব।
সঙ্ঘ নেতা প্রফুল্ল কেতকরের লেখা ওই নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘চিনের সমস্যা হল তাদের পার্টি এবং তার আদর্শ। তথাকথিত পিপলস ডেমোক্র্যাসি কখনই জনগণকেন্দ্রিক ছিল না, সব সময়ই পার্টি ও তার ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে ঘুরপাক খেয়েছে। চিনের সঙ্গে সংযোগ রাখার প্রশ্নে এই সব খুনে আদর্শকে খেয়ালের মধ্যে রাখতে হবে।’ নিবন্ধে সরাসরি বলা হয়েছে, ‘কোভিড অতিমারি ছড়ানোর বিষয়টকে নির্লজ্জ ভাবে গোপন করে দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের পরিচয় দিয়েছে চিন। অন্যদের দোষারোপ করেছে। আমরা যখন সীমান্ত পরিকাঠামো তৈরি করছি, চিন দাদাগিরি দেখানোর চেষ্টা করেছে। গোটা বিশ্ব যখন চিনের আচরণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে, শি চিনফিং এবং তাঁর তাঁবেদাররা উগ্র আচরণ চালিয়ে যাচ্ছেন।’