নীতীশ কুমার। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে সব মন্দির, মঠ, ধর্মীয় ট্রাস্টকে বাধ্যতামূলক ভাবে নথিবদ্ধ হতে হবে বলে নির্দেশ দিল বিহারের বিজেপি-জেডিইউ জোটের এনডিএ সরকার। আর এই নির্দেশ ঘিরেই রাজ্যে জোর রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই সমস্ত জেলাশাসক এবং বিভাগীয় কমিশনারদের এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করার জন্য সরকারি ভাবে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।
সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, অনথিভুক্ত সব মন্দির, মঠ, ট্রাস্টকে নথিভুক্ত করার পাশাপাশি তাদের অস্থাবর সম্পত্তির হিসেবও দাখিল করতে হবে। কারণ হিসেবে সরকারি ভাবে বলা হয়েছে, ওই সব প্রতিষ্ঠানকে জবরদখল থেকে রক্ষা করতেই এই নির্দেশ। এই সংক্রান্ত নির্দেশটি বেশ কয়েক দিন আগে দেওয়া হলেও সরকারি সূত্রের খবর, বেশ কয়েকটি জেলা প্রশাসন এ নিয়ে এখনও পদক্ষেপই করেনি। রাজ্যের আইনমন্ত্রী নিতিন নবীনের মন্ত্রক কিছুটা আক্ষেপের সুরে জানিয়েছে, রাজ্যের ৩৮টি জেলার মধ্যে মাত্র ২১টি জেলা সরকারের নির্দেশ মেনে নথিভুক্তির কাজ শুরু করেছে। বাকি জেলাগুলির প্রশাসনের তরফে সরকারকে কোনও জবাবও দেওয়া হয়নি বলেই এ বারে এই নথিভুক্তিকরণে গতি আনতে এ বার সব বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলাশাসকদের কড়া ভাষায় নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। একই সঙ্গে মন্দির এবং ট্রাস্টের এই সব সম্পত্তি অবৈধ ভাবে কেনাবেচা ঠেকাতে কড়া নজরদারি রাখতেও বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি দেশে ওয়াকফ আইনে একাধিক সংশোধনী-সহ একটি বিল সংসদে পেশ করেছে। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বিরোধী দল এবং মুসলিম সংগঠনগুলি। এই অবস্থায় বিহার সরকারের নির্দেশিকা ঘিরে রাজ্যে সরব বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতৃত্ব এই নির্দেশিকার সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলছেন, রাজ্য সরকার সব দিক থেকে ব্যর্থ। এমনকি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসও ঠেকাতে পারে না। এই অবস্থায় নিজেদের ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরাতেই রাজনৈতিক মেরুকরণের লক্ষ্য নিয়ে এ পদক্ষেপ করেছে তারা।
একই সুরে প্রধান বিরোধী দল আরজেডির মৃত্যুঞ্জয় তিওয়ারি নীতীশ কুমারের সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, এই সংক্রান্ত নির্দেশিকাটি জারি করা হয়েছিল জুন মাসে। কিন্তু অতি সম্প্রতি সেটিকে সরকারি ভাবে প্রকাশ করে নীতীশ-বিজেপি জোট আসলে তাদের ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।