National

দুবাইয়ে দাউদের নেমন্তন্ন! গিয়েওছিলেন ঋষি কপূর

চা খেতে খেতে দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে জমাটি আড্ডা মেরেছিলেন ঋষি কপূর। এক বার নয়। দু’-দু’বার। ’৮৮ আর ’৮৯-এ। ঋষির রীতিমতো ‘ফ্যান’ ছিলেন দাউদ। তাই যখনই ঋষির সঙ্গে দেখা হয়েছে, তখনই ঋষিকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁকে একেবারে খাতির-যত্নে ভরিয়ে দিয়েছিলেন দাউদ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ ১৬:২৯
Share:

ঋষি কপূর।

চা খেতে খেতে দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে জমাটি আড্ডা মেরেছিলেন ঋষি কপূর। এক বার নয়। দু’-দু’বার। ’৮৮ আর ’৮৯-এ। ঋষির রীতিমতো ‘ফ্যান’ ছিলেন দাউদ। তাই যখনই ঋষির সঙ্গে দেখা হয়েছে, তখনই ঋষিকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁকে একেবারে খাতির-যত্নে ভরিয়ে দিয়েছিলেন দাউদ।

Advertisement

দু’বারই দাউদের সঙ্গে ঋষির দেখা হয়েছিল দুবাইয়ে। এমনটাই জানিয়েছেন ঋষি কপূর। তাঁর প্রকাশিতব্য আত্মজীবনীতে ঋষি লিখেছেন, ‘‘সেটা ’৮৮ সাল। বিমানে সবে দুবাইয়ে নেমেছি। সঙ্গে ছিল প্রিয়তম বন্ধু বিট্টু আনন্দ। ‘আশা ভোঁসলে-আরডি বর্মণ নাইট’-এ অংশ নিতে। দাউদ ওই সময় তার সাগরেদদের কাউকে না কাউকে দুবাই বিমানবন্দরে দাঁড় করিয়ে রাখত। কোনও ভিআইপি বিমানবন্দরে নামলেই তাঁর আসার খবর এক লহমায় পৌঁছে যেত দাউদের কানে! আমি যখন লাগেজ নিয়ে বিমানবন্দর ছেড়ে বেরোচ্ছি, সেই সময় হঠাৎই একটি অজানা, অচেনা যুবক আমার কাছে এগিয়ে এসে আমার হাতে একটা মোবাইল ফোন ধরিয়ে দিল। বলল, ‘‘দাউদ সাব বাত করেঙ্গে।’’ ’৯৩-এর মুম্বই বিস্ফোরণের অনেক আগেকার ঘটনা। আর তখনও তেমন কেউই জানতেন না, দাউদ দেশের দুশমন।’’


স্ত্রী নীতু সিংহের সঙ্গে ঋষি কপূর

Advertisement

ঋষি লিখেছেন, ‘ফোনে দাউদ আমাকে স্বাগত জানিয়ে বলল, ‘‘আপনার কোনও কিছুর দরকার হলে, আমাকে বলবেন।’’ দাউদ আমাকে ওর বাড়িতে যাওয়ারও আমন্ত্রণ জানাল। এর পরেই যে লোকটি আমাকে দাউদের ফোন ধরিয়ে দিয়েছিল, সে তার পরিচয় জানাল। বলল, তার নাম- ‘বাবা’। সে দাউদের ডান হাত। লোকটাকে দেখে বেশ ভদ্র, সভ্য বলেই মনে হল। একটু ব্রিটিশ, ব্রিটিশ দেখতে। লোকটি বলল, ‘‘চলুন। দাউদ সাব আপনার সঙ্গে চা খেতে চান।’’ আমি রাজি হয়ে গেলাম। সেই রাতে আমাকে আর বিট্টুকে হোটেল থেকে একটি রোলস রয়েস গাড়িতে চাপিয়ে দাউদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গাড়িতেই ড্রাইভার টেলিফোনে কারও সঙ্গে কথা বলছিল কুটচি ভাষায়। আমি তার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারিনি। তবে আমার বন্ধু তার কিছুটা বুঝতে পেরেছিল। ওর মনে হয়েছিল, আমাদের কোনও এক অজ্ঞাত জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যখন পৌঁছলাম, আমাদের স্বাগত জানাতে বেরিয়ে এল দাউদ ইব্রাহিম। একেবারে ইতালিয় ড্রেসে। তার পর খুব সবিনয়ে বলল, ‘‘আমি আপনাদের চা খেতে ডেকেছি, কারণ আমি মদ খেতে বা তা কাউকে খাওয়াতে ভালবাসি না।’’ সেই সন্ধ্যায় আমরা চার ঘণ্টা ধরে দাউদের সঙ্গে বসে চা আর বিস্কুট খেয়েছিলাম। আর জমাটি আড্ডা মেরেছিলাম। ওই আড্ডায় দাউদ খোলামেলা ভাবেই বলল, ‘‘আমি অনেক চুরিচামারি করেছি। কিন্তু কখনও কাউকে খুন-টুন করিনি। তবে খুন করিয়েছি আমার সাগরেদদের দিয়ে।’’

আরও পড়ুন- নিজের দেশেই পরমাণু হামলা চালাতে চলেছে পাক সেনা! চাঞ্চল্যকর দাবি

ঋষি তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ‘‘দাউদ বলেছিল, আমার ‘তাওয়েইফ’ ছবিটি ওর ভালো লেগেছিল। ওই ছবিতে আমার রোলটার নাম ছিল দাউদ। আমার বাবা, আমার কাকাদের সম্পর্কেও শ্রদ্ধাশীল ছিল দাউদ। সে দিন আমরা বেশ কয়েক কাপ চা খেয়েছিলাম।’’

এর পর আরও এক বার দুবাইতেই দাউদের সঙ্গে দেখা হয়েছিল ঋষির। ঋষি লিখেছেন, ‘‘আমার খুব জুতো কেনার শখ। দুবাইয়ে সেই সময় আমার সঙ্গে ছিল নীতু। একটা লেবানিজ স্টোরে গিয়েছিলাম জুতো কিনতে। সেখানে দাউদ ছিল। তার হাতে ছিল একটি মোবাইল ফোন। আর ওকে ঘিরে রেখেছিল জনা আট-দশ জন লোক। আমাকে দেখেই দাউদ বলল, ‘‘যা পার কিনে নাও। দাম দিতে হবে না। আমি দিয়ে দেব।’’ আমি ওকে ওর ভদ্রতার জন্য ধন্যবাদ জানালাম। বললাম, ‘‘না, না আমিই কিনছি।’’ তার পর দাউদ আমাকে ওর মোবাইল নম্বর দিল। আমি দিতে পারলাম না। কারণ সেই ’৮৯ সালে ভারতে তখনও মোবাইল ফোন আসেনি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement