বুড়াচাপোরিতে মৃত গন্ডার। ছবি: বন দফতরের সৌজন্যে
গন্ডারের নতুন ‘ঘর’ তৈরির প্রকল্প প্রথম পর্যায়েই ধাক্কা খেল। ২৯ মার্চ কাজিরাঙার বাগরি রেঞ্জ থেকে একটি স্ত্রী গন্ডার ও তার শাবককে লাউখোয়া-বুড়াচাপোরি অভয়ারণ্যে পাঠানো হয়েছিল। বন দফতরের পরিকল্পনা ছিল— কাজিরাঙা, মানস, পবিতরার পরে একশৃঙ্গ গন্ডারের চতুর্থ আবাসস্থল হিসেবে লাউখোয়াকে গড়া তোলা। গত রাতে স্ত্রী গন্ডারটির মৃত্যু হয়। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, সম্ভবত সাপের কামড়ে সেটির মৃত্যু হয়েছে।
গন্ডার আনার জন্য কাজিরাঙা থেকে বিশেষ হাতি-ঘাস বুড়াচাপোরিতে রোপণ করা হয়। নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি ঘেরাটোপে তাদের রাখা হয়েছিল। বনকর্মীরা জানান, গত কাল সন্ধেয় স্বাভাবিক ভাবেই মা তার শাবককে দুধ খাওয়াচ্ছিল, ঘুরছিল। রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ আচমকা সে অস্থির হয়ে ওঠে। ছটফট করতে থাকে। মাটিতে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে মাথা ঠোকার পরে তার মৃত্যু হয়।
চিকিৎসক কুশলকুমার শর্মা জানান, এ দিন গন্ডারটির ময়না তদন্ত করা হয়েছে। কিন্তু প্রাথমিকভাবে তার হৃদযন্ত্র, কিডনি, যকৃতে কোনও অস্বাভাবিকতা মেলেনি। ফুসফুসে সামান্য নিউমোনিয়া ছিল। যে ভাবে আচমকে সে অস্থির হয়ে উঠেছিল, তাতে চিকিৎসকদের ধারণা, সম্ভবত ভাইপার প্রজাতির সাপের কামড়ে তার মৃত্যু হয়। আপাতত নমুনা ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। কুশলবাবু জানান, জঙ্গলে ঘোরার ফলে পশুদের পায়ে এমনিতেই অনেক ছোট ক্ষত থাকে। তাই সাপের দাঁতের দাগ বোঝা যায় না। তবে এই গন্ডারটির ক্ষেত্রে সর্পদংশনের কয়েকটি লক্ষ্ণণ মিলেছে। ফরেন্সিক পরীক্ষার পরেই এ নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। প্রতি বছর কাজিরাঙায় একাধিক হাতি ও গন্ডার সাপের কামড়ে মারা যায়। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবেই ধরা হয়। কুশলবাবু বলেন, ‘‘মা-মরা শাবকটি নিজে ঘাস খেতে সক্ষম হলেও এত দ্রুত মায়ের অভাব পূরণ করা সম্ভব নয়। আমরা আবার কাজিরাঙা বা পশু উদ্ধারকেন্দ্র থেকে এখানে গন্ডার আনব।’’