Data Protection Bill

নতুন তথ্য সুরক্ষা বিলের খসড়া, ব্যক্তিগত তথ্য মজুত রাখতে পারে সরকার

ডিজিটাল দুনিয়ার বাক্‌-স্বাধীনতার পক্ষে সওয়ালকারী সংগঠন ইন্টারনেট ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের বক্তব্য, বিলের খসড়ায় অস্পষ্ট শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে কেন্দ্রীয় সরকারকে অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২২ ০৮:২৮
Share:

নতুন তথ্য সুরক্ষা বিলের খসড়াতেও কেন্দ্রীয় সরকার বা তার সংস্থাগুলিকে আইনের আওতার বাইরে রাখা হল। প্রতীকী ছবি।

আপনি দুর্গাপুজোর ছুটিতে কোথায় বেড়াতে গিয়েছিলেন, জন্মদিনে বন্ধুকে কী উপহার দিয়েছেন, অফিসের কাজের মধ্যে কাকে কত বার ফোন করেছেন— সরকার বা তার কোনও সংস্থা চাইলে যতদিন খুশি সেই তথ্য নিজের কাছে রেখে দিতে পারে। সেই তথ্য যেমন খুশি কাজে লাগাতে পারে।

Advertisement

নতুন তথ্য সুরক্ষা বিলের খসড়াতেও কেন্দ্রীয় সরকার বা তার সংস্থাগুলিকে আইনের আওতার বাইরে রাখা হল। বেসরকারি সংস্থা সাধারণ মানুষের তথ্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মুছে না ফেললে বা সেই তথ্য ফাঁস করে দিলে তাকে ৫০০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে বলে আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার বা তার সংস্থা যতদিন খুশি নিজের কাছে তথ্য মজুত রাখতে পারে। ‘বিগ ব্রাদার’-এর মতো তাতে নজরদারি করতে পারে।

ডিজিটাল দুনিয়ার বাক্‌-স্বাধীনতার পক্ষে সওয়ালকারী সংগঠন ইন্টারনেট ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের বক্তব্য, বিলের খসড়ায় অস্পষ্ট শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে কেন্দ্রীয় সরকারকে অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

এর আগে ২০১৯ সালে মোদী সরকার যে তথ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে এসেছিল, তাতেও ঠিক এই বিষয়েই যৌথ সংসদীয় কমিটিতে মতভেদ হয়েছিল। বিজেপি সাংসদ পি পি চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন কমিটি গোয়েন্দা বাহিনীর মতো সংস্থাকে জাতীয় নিরাপত্তার নামে ছাড় দেওয়ার সুপারিশ করে। যার অর্থ, সরকারি সংস্থা চাইলে আপনি মোবাইল কিনছেন, না-কি দার্জিলিং যাওয়ার কথা ভাবছেন, তার উপরে নজরদারি করতে পারে। রিপোর্ট চূড়ান্ত হওয়ার সময় কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, বিজু জনতা দলের সাংসদেরা এর সঙ্গে একমত হননি। তাঁদের যুক্তি ছিল, আমজনতার তথ্য কেউ যাতে খুশি মতো ব্যবহার করতে না পারে, সেই লক্ষ্যে কড়া আইন হলে কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থার ক্ষেত্রেও একই আইন প্রযোজ্য হওয়া উচিত।

কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই পুরনো বিল সংসদ থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। জনগণের মতামত জানার জন্য নতুন বিলের খসড়া প্রকাশ হয়েছে। কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের খবর, বাজেট অধিবেশনের সময় এই বিল সংসদে পেশ করা হতে পারে।

তথ্য সুরক্ষা বিলে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল, তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে এ দেশের মানুষের তথ্য দেশের বাইরে মজুত করতে দেওয়া হবে কি না। বিলের খসড়ায় বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার খতিয়ে দেখে কোন দেশে তথ্য মজুত করা যাবে, তা জানাবে। কোনও ব্যক্তির তথ্য কী ভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে, তার উপরে নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

কোনও পরিষেবা বন্ধ করে দিলে কেউ দাবি করতে পারেন, তাঁর তথ্য মুছে দেওয়া হোক। অর্থাৎ, কেউ ফেসবুক ব্যবহার বন্ধ করে দিয়ে দাবি করতে পারেন, এতদিন তিনি সেখানে কী কী করেছেন, তার যাবতীয় তথ্য ফেসবুকের তথ্যভান্ডার থেকে মুছে দেওয়া হোক।

মোবাইলে অনেক অ্যাপই আমজনতার কাছে জন্মের তারিখ থেকে বাড়ির ঠিকানা চেয়ে থাকে। বিলের খসড়ায় বলা হয়েছে, কেউ অপ্রয়োজনীয় তথ্য দিতে না চাইলে তাঁকে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। তবে কোনটা অপ্রয়োজনীয় তথ্য, তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement