প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ। শনিবার, দিল্লিতে। ছবি: এএফপি।
নারী শক্তির উত্থানই মুল থিম হয়ে উঠল শনিবার দিল্লির রাজপথে দেশের ৭০তম প্রজাতন্ত্র দিবসের উদযাপনে। সেনা কুচকাওয়াজে নেতৃত্ব দিলেন অসম রাইফেলসের মহিলারা। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কুচকাওয়াজেও সামনের সারিতে রাখা হল মহিলাদের। বাইক নিয়ে নানা রকমের কসরৎ দেখালেন আর এক মহিলা সেনা অফিসার। স্থল, জল, বায়ু, সর্ব স্তরেই ভারতের সামরিক শক্তির প্রদর্শন হল এ দিন। দেখানো হল বায়ুসেনার সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান। প্যারেডে অংশ নিলেন আইএনএ-র চার জন প্রবীণ সৈনিক। যাঁদের প্রত্যেকের বয়স ৯০ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে।
‘জাতির জনক’ মহাত্মা গাঁধীর জন্মের সার্ধ শতবর্ষ এ বার। তাঁর সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিশেষ সম্পর্ক ছিল। সেটা মনে রেখেই এ বারের অনুষ্ঠানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসেবে সস্ত্রীক আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসাকে। এ বারই প্রথম ভারতে এসেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি। স্ত্রী ছাড়াও তাঁর সঙ্গে এসেছে সে দেশের ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল।
প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ। শনিবার, দিল্লিতে। ছবি: পিআইবি
অনুষ্ঠানের আগে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে ধরা পড়ে দুই সন্দেহভাজন জঙ্গি। পুলিশের দাবি, তারা নাশকতার ছক করেছিল। তাই এ দিন গোটা দিল্লিতেই নিরাপত্তার বেষ্টনীকে নিশ্ছিদ্র রাখার তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। মোতায়েন ছিলেন ২৫ হাজার পুলিশকর্মী। রাজপথে ছিল মোট ৪০০টি মেটাল ডিটেক্টর।
আরও পড়ুন- যে নেশন ‘পাবলিক’ তৈরি করে সেই নেশন তাদের অন্য নেশনের বিরুদ্ধে জাগিয়ে তোলে
আরও পড়ুন- কিছু না করাটাও প্রতিরোধ
প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ। শনিবার, দিল্লিতে। ছবি: পিআইবি
গতকাল জাতীর উদ্দেশে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তিনি বলেন, বহুত্ববাদই ভারতের বৈশিষ্ট। উচ্চবর্ণের জন্য দশ শতাংশ সংরক্ষণেরও প্রশংসা করেছেন তিনি। শনিবার সকালে অমর জওয়ান জ্যোতিতে গিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পরেই শুরু হয় কুচকাওয়াজ। ভারতের কৃষ্টি এবং সংস্কৃতিই উঠে আসে রাজধানীর রাজপথে। রেল-সহ কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মোট ২০টি ট্যাবলোর প্রদর্শন হয়।
তিন বছর বাদে ফের রেলের ট্যাবলো ছিল এ বারের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে। সেখানে ১৮৯৩ সালের সেই ঘটনাকে তুলে ধরা হয়, যে দিন দক্ষিণ আফ্রিকার একটি স্টেশনে লাঞ্ছনার শিকার হন গাঁধী। তা ছাড়াও রেলের ট্যাবলোতে ছিল ভারতের দ্রুততম ট্রেন ১৮-র উল্লেখও।
পাঞ্জাবের ট্যাবলোর থিম ছিল জালিয়ানওয়ালাবাগের ঘটনা। ঠিক একশো বছর আগে ওই গণহত্যার ঘটনাটি ঘটেছিল। এর আগে দু'বার পাঞ্জাবের ট্যাবলো প্রদর্শিত হয়েছিল প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে।
প্যারেডের জন্য এ দিন বিঘ্নিত হয় দিল্লির মেট্রো পরিষেবা। সেট্রাল সেক্রেটারিয়েট এবং উদ্যোগ ভবন স্টেশন বন্ধ থাকে বেলা ১২টা পর্যন্ত। পৌনে ন'টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে প্যাটেল চক স্টেশনও।