প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে করিমুলের নিজস্বী।
নিজস্বী তুলতে হাত থেকে মোবাইলটা যিনি নিয়ে নিলেন, তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী।
প্রজাতন্ত্র দিবসে রাষ্ট্রপতি ভবনের অনুষ্ঠান ‘অ্যাট হোম’। রয়েছেন রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, দশ আসিয়ান দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, রাহুল গাঁধী, মনমোহন সিংহ। প্রধানমন্ত্রী এসেই সকলকে সার বেঁধে নমস্কার করলেন। থমকে দাঁড়ালেন ‘অ্যাম্বুল্যান্স দাদা’কে দেখে। গত বছর জলপাইগুড়ির এই অচেনা করিমুল হককেই পদ্মশ্রী দিয়ে দেশে বিখ্যাত করেছিলেন মোদী। আজ তাঁকে দেখেই প্রশ্ন করলেন, ‘‘কী খবর? আপনার ওখানে একটি সেতু তৈরির কথা ছিল, হয়েছে?’’
ভিড়ের মধ্যে তাঁকে দেখে মোদী যে দাঁড়িয়ে গপ্পো জুড়বেন, ভাবতেও পারেননি করিমুল। পাকা রাস্তা নেই, যানবাহন চলারও প্রশ্ন নেই। অসুস্থ মাকে পাঁজাকোলা করে দৌড়চ্ছিলেন হাসপাতালে। তবু বাঁচাতে পারেননি। জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় সে ঘটনা। তারপর নিজের বাইককেই বানিয়েছেন অ্যাম্বুল্যান্স। এলাকায় খ্যাত ‘অ্যাম্বুল্যান্স দাদা’ নামেই। সরকারের মন্ত্রী সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিকেও মোদী পাঠিয়েছিলেন বাড়িতে। করিমুল চেয়েছিলেন, মালবাজার যাওয়ার জন্য সেতু হলে জঙ্গল পেরোতে হয় না। যাতায়াতে অনেকটা সুবিধে হয়। আজ রাষ্ট্রপতি ভবনে তাঁকে দেখে সে কথাই জিজ্ঞাসা করলেন প্রধানমন্ত্রী।
করিমুল বললেন, ‘‘কিছুই হয়নি।’’ মোদীর আশ্বাস, ‘‘শীঘ্রই হয়ে যাবে।’’ এর পরেই আমতা আমতা করে করিমুল আবদার করে বসলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটি নিজস্বীর। কিন্তু মোবাইলে ঠিক মতো ছবিও তুলতে পারেন না। বুঝতে পেরেই সঙ্গে সঙ্গে ফোনটি করিমুলের থেকে নিয়ে নিলেন প্রধানমন্ত্রী। নিজেই করিমুলের সঙ্গে নিজস্বী তুললেন। রাষ্ট্রপতি ভবনে তারকা সমাবেশে রাহুল গাঁধীর সঙ্গেও আলাপটা সেরে ফেলেন করিমুল। নিজের পরিচয় দেন, তাঁর সঙ্গেও ছবি তোলেন।
করিমুলকে নিয়ে রুপোলি পর্দায় একটি ছবিও তৈরি হতে চলেছে। করিমুল নিজেই জানালেন, পরিচালক তাঁর ভূমিকায় অভিনেতা বাছাইয়ের কাজও প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। সামনের মাসেই শুরু হবে শ্যুটিং। তাঁর গ্রামেও বসবে সিনেমার সেট।