CAA

Afghan refugee: আফগান শরণার্থীদের নাগরিকত্বে ধর্ম-কাঁটা!

আজকের আফগানিস্তান থেকে যাঁরা পালিয়ে আসতে চাইছেন তাঁদের বড় অংশ, হয় ধর্মীয় কারণে অত্যাচারের শিকার কিংবা ভবিষ্যতে অত্যাচারিত হতে পারেন, সেই ভয়ে দেশ ত্যাগ করতে চাইছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২১ ০৭:৩৩
Share:

স্বস্তি: সুযোগ এসেছে দেশ ছাড়ার। শরণার্থীদের জন্য আমেরিকার বিশেষ বিমানে ওঠার পথে এক আফগান কিশোর। বৃহস্পতিবার কাবুলের হামিদ কারজ়াই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ছবি: রয়টার্স

কেন্দ্র এখনও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-র নিয়মকানুন তৈরি করে উঠতে পারেনি। তবে প্রাণ বাঁচাতে ভিসা নিয়ে ভারতে আসা আফগান শরণার্থীদের সিএএ মেনেই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে জানাল কেন্দ্র। সূত্রের মতে, নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মই মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হবে। বিরোধীদের দাবি, আফগানিস্তানের যা পরিস্থিতি, তাতে মানবিকতার ধর্ম মেনে আশ্রিত আফগানদের ধর্মনির্বিশেষে নাগরিকত্ব দিক নয়াদিল্লি।

Advertisement

দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসেই সিএএ পাশ করিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ওই আইনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় অত্যাচারের কারণে পালিয়ে আসা সংখ্যালঘু ছয় ধর্মের (হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, পার্সি, জৈন ও খ্রিস্টান) ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত। ধর্মভিত্তিক এই আইন বৈষম্য সৃষ্টিকারী এই অভিযোগ এনে গোড়া থেকেই সরব ছিলেন বিরোধী দল ও নাগরিক সমাজ। কেন্দ্রের পাল্টা যুক্তি, প্রতিবেশী তিনটি দেশই মুসলিম রাষ্ট্র। ফলে সেখানে সংখ্যাগুরু মুসলিমদের উপর অত্যাচার হওয়ার প্রশ্ন নেই। তাই ওই আইনে মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হয়নি। এই নীতির যৌক্তিকতা নিয়ে আইন পাশের সময়েই প্রশ্ন উঠেছিল। জয়রাম রমেশের মতো কংগ্রেসের নেতাদের যুক্তি ছিল, শিয়া, আহমদি সম্প্রদায় মুসলিম হলেও পাকিস্তানে ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার। প্রশ্ন ওঠে, তাদের কেন আশ্রয় দেবে না ভারত?

আজকের আফগানিস্তান থেকে যাঁরা পালিয়ে আসতে চাইছেন তাঁদের বড় অংশ, হয় ধর্মীয় কারণে অত্যাচারের শিকার কিংবা ভবিষ্যতে অত্যাচারিত হতে পারেন, সেই ভয়ে দেশ ত্যাগ করতে চাইছেন। তাঁদের অধিকাংশই মুসলিম। খুব অল্প সংখ্যক রয়েছেন হিন্দু-শিখ। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, “প্রাণ বাঁচাতে একই বিমানে ভারত উড়ে এসেছেন দুই আফগান নাগরিক। যাঁদের এক জন হিন্দু, অন্য জন মুসলমান। সিএএ আইন মানলে তাঁদের এক জন নাগরিকত্ব পাবেন, আর এক জন পাবেন না।” কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য আফগানিস্তানের ঘটনা চোখে আঙুল দেখিয়ে দিল ওই আইনের ত্রুটি। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের পরামর্শ, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে পরিস্থিতির বিচার করুক কেন্দ্র। ওই দেশে মহিলাদের পরিস্থিতি পণ্যের চেয়ে খারাপ। মানুষ যেখানে বিমানের চাকায় নিজেকে বেঁধে পালাতে গিয়ে মারা যাচ্ছেন, সেখান থেকে কেউ যদি প্রাণ হাতে করে পালিয়ে আসেন, তা হলে তাঁদের অবশ্যই মানবিকতার খাতিরে নাগরিকত্ব দেওয়া উচিত। বিশেষ করে ভারতের মন্ত্রই যেখানে অতিথিদেবো ভব।

Advertisement

বিজেপি শিবিরের পাল্টা যুক্তি জানিয়েছে, মানবতার খাতিরে ইতিমধ্যেই আফগান নাগরিকদের ই-ভিসা দেওয়া শুরু করেছে ভারত। আগামী দিনেও ই-ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু থাকবে। কিন্তু নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রশ্নে কেন্দ্র কিছু নিয়ম তৈরি করেছে। তা মেনে চলা উচিত। তা ছাড়া, ভারত তো মানবিকতার খাতিরে আফগান শরণার্থীদের গ্রহণ করা চালু রেখেছে। পাশের দেশ পাকিস্তান তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। ওই শরণার্থীদের ভার নিতে বিশ্বের অন্য মুসলিম দেশগুলি এগিয়ে আসুক ভারতের মতো।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement