মাত্র দু’মাস আগে ‘ভাল ব্যবহারের’ জন্য হোম থেকে মুক্তি পেয়েছিল সে। চলতি সপ্তাহের সোমবার ফের এক খুনের ঘটনায় নাম জড়াল দিল্লির ১৭ বছরের এক নাবালক অপরাধীর। কয়েক মাস আগে এক শিশুকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল তার রিরুদ্ধে। বিচারে অপরাধ প্রমাণিত হয়। নাবালক হওয়ায় জেল নয়, যেতে হয়েছিল হোমে। সেখান থেকে মুক্তিও পায় মাস তিনেক আগে। গত সোমবার দক্ষিণ দিল্লির বিকে দত্ত কলোনিতে খুন হন ৬৫ বছরের মিথিলেশ জৈন। আর এ বারও অভিযুক্ত সেই নাবালক অপরাধী।
অবসরপ্রাপ্ত মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস অফিসার মিথিলেশ জৈনকে খুন করেই ক্ষান্ত হয়নি ওই নাবালক। অভিযোগ, খুনের পর সে লুঠ করেছে সোনার গয়না, দু’টো মোবাইল ফোন, একটি আই প্যাড এমনকী নগদ টাকাও।
সোমবার এক বন্ধুকে খোঁজার ছলে মিথিলেশের বাড়িতে ঢোকে অভিযুক্ত। মিথিলেশদেবীকে প্রণাম করে জল চায় সে। জল আনতে ঘরের ভিতর ঢুকলে, ওই নাবালকও তাঁর পিছন পিছন ঘরে ঢুকে আসে। অভিযোগ, এর পর তাঁকে গলা টিপে খুন করে সে। প্রাথমিক তদন্তে অবশ্য এই মৃত্যু স্বাভাবিক বলেই মনে হয়েছিল পুলিশের। কিন্তু ময়না তদন্তের পরে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। রিপোর্ট অনুযায়ী শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে মিথিলেশ দেবীকে। বুধবার চুরি যাওয়া একটি মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে ওই কিশোরের হদিশ পায় পুলিশ। ফরিদাবাদ থেকে ধরা হয় তাকে।
অভিযুক্তের বাড়ির লোকজন জানিয়েছেন, এক ব্যক্তি তাকে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে একটি ডান্স রিয়েলিটি শোয়ে জায়গা পাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তারপর থেকে বাড়িতেও টাকা চুরি করা শুরু করে সে। মাস পাঁচেক আগে, তাই প্রেমিকার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে এক ১৩ বছরের এক কিশোরকে অপহরণ করে ওই নাবালক। দাবি করে ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ। কিন্তু অপহৃত কিশোরের বাবা টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে নির্মম ভাবে খুন করে ১৭ বছরের অপরাধী। ২১ নভেম্বর ছাড়া পায় হোম থেকে।
কিন্তু সেই টাকা জোগার করতে গিয়ে ফের যে সে খুনের মত অপরাধে জড়িয়ে পরবে, এখনও সেটা বিশ্বাস করতে পারছেন না বাবা-মা।
দিল্লিতে নির্ভয়া গণধর্ষণ মামলার পর ধর্ষণ, খুনের মত মারাত্মক অপরাধের ক্ষেত্রে নাবালক অপরাধীদের বয়সসীমা কমিয়ে আনার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে সংসদের উভয়কক্ষেই। যদিও এখনও অাইন হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি এই প্রস্তাব। দিল্লির এই ঘটনা আরও একবার দ্রুত অাইন পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা সম্ভবত বুঝিয়ে দিল।
আরও পড়ুন-শিশু ধর্ষণকারীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট