এত বড় উচ্ছ্বাসের অবকাশ মিলবে ত্রিপুরায়, বিজেপি কর্মীরাও কি ভেবেছিলেন সে কথা? ছবি: পিটিআই।
২০০৯ সাল। ৯০ আসনের হরিয়ানার বিধানসভা নির্বাচন। বিজেপি-র ঝুলিতে মাত্র মাত্র ৪টি আসন। ঠিক পাঁচ বছর পেরিয়ে ২০১৪ সালের বিধানসভা নির্বাচন। হরিয়ানায় এক লাফ ৪৭টি আসন বিজেপির দখলে। প্রান্তিক শক্তি থেকে সরাসরি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ শাসকের সিংহাসন।
২০১২ সাল। ৬০ আসনের মণিপুর বিধানসভা নির্বাচন। বিজেপি কোথাও নেই। ঠিক পাঁচ বছর পেরিয়ে ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচন। মণিপুরে এক লাফে ২১টি আসন বিজেপির দখলে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা মিলল না ঠিকই। কিন্তু পরবর্তী কয়েক দিনের তৎপরতায় সংখ্যা বাড়াতে বাড়াতে ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছে গেল বিজেপি, গড়ল সরকার।
২০১৩ সাল। ৬০ আসনের ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন। কোথাও পদ্ম ফোটেনি। পদ্ম ফুটতে পারে, এমনটা কেউ কল্পনাও করেননি। ঠিক পাঁচ বছর পেরিয়ে ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচন। ত্রিপুরায় এক লাফে ৪৩টি আসন বিজেপির দখলে। প্রায় অস্তিত্বহীন অবস্থা থেকে দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা।
আরও পড়ুন: ত্রিপুরাছাড়া করার হুমকি হিমন্তের, সেই মানিকেরই আশীর্বাদ নিলেন বিপ্লব
বিজেপির সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে, হরিয়ানা, মণিপুর এবং ত্রিপুরার জয়ই সবচেয়ে বিস্ময়কর। আর এই তিন রাজ্যের মধ্যে আবার সবচেয়ে চোখ ধাঁধানো উত্থান ত্রিপুরাতেই।
কী ভাবে এল এই বিপুল সাফল্য? ঠিক কী কৌশলে এগিয়েছিল বিজেপি? গত আড়াই দশক ধরে ত্রিপুরা যাঁদের দখলে ছিল, সেই বামেদের তরফেই বা ত্রুটিগুলো ঘটল কোন কোন ক্ষেত্রে? অনুন্নয়ন? দুর্নীতি? মোহভঙ্গ? জনগণের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া? বুথে বুথে কতটা গভীরে পৌঁছেছে বিজেপির শিকড়, সে কথা বুঝতে না পারা?
গ্রাউন্ড জিরো থেকে বিশদ বিশ্লেষণ, দেখে নিন ভিডিও:
ত্রিপুরায় বিপুল জয়কে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন, অভিনন্দন জানিয়েছেন দলের নেতা-কর্মীদের।
আরও পড়ুন: তৃণেই বিলীন তৃণমূলের ২৪, জামানত জব্দ বেশিরভাগ কেন্দ্রে
তবে শুধু বিজেপি নেতা-কর্মীরা নন, আরএসএস-ও অত্যন্ত সক্রিয় ছিল ত্রিপুরা বিজয় অভিযানে। জানাচ্ছেন বিজেপি নেতারাই। ত্রিপুরার প্রান্তে প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছেন সঙ্ঘ প্রচারকরা, অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, ত্রিপুরাবাসীর ‘কাছের মানুষ’ হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছেন। বিজেপি বা আরএসএস-এর মতাদর্শ যে বাঙালিয়ানার বিরোধী নয়, সে কথা বোঝাতে সভা-সমাবেশ শেষে বার বার কর্মী-সমর্থকদের জন্য মাছ-ভাতের বন্দোবস্ত হয়েছে। একই ভাবে একাত্ম হয়ে ওঠার চেষ্টা হয়েছে উপজাতি গ্রামে গিয়েও। ফল দিয়েছে অক্লান্ত পরিশ্রম। সুনীল দেওধর, রাম মাধবদের মুখে আজ হাসির রেখা প্রশস্ত।