প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
সামনেই তিন রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে। নভেম্বরেই মহারাষ্ট্র ও ঝড়খণ্ডে বিধানসভা ভোট হবে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লি বিধানসভার নির্বাচন। সেই ভোট এগিয়ে আসারও ইঙ্গিত দিয়েছে রাজ্যের শাসক আম আদমি পার্টি। মঙ্গলবার হরিয়ানায় পর পর তিন বার জিতে হ্যাটট্রিকের পরে দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে সেই তিন রাজ্য জয়ের স্লোগান উঠল। আর সেখানেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হরিয়ানা জয়ের জন্য বিজেপি কর্মীদের ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি আক্রমণ করেন কংগ্রেসকে। বলেন, ‘‘কংগ্রেস অতীতের মত এ বারেও জোট সঙ্গীদের ডুবিয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কংগ্রেস লোকসভা নির্বাচনে জোট সঙ্গীদের সাহায্যে জিতেছে অনেক আসনে। আর সঙ্গীদের ডুবিয়েছে অনেক জায়গায়।’’
মঙ্গলবার রাত ৮টায় দলের সদর দফতরে প্রধানমন্ত্রী কর্মীদের উদ্দেশে বক্তৃতা দেবেন বলে সন্ধ্যা থেকেই প্রস্তুতি ছিল দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের দফতরে। মোদী আসার আগে সাধারণ সম্পাদক বিনোদ তাওড়ে কর্মীদের স্লোগান শেখান। মোদী দফতরে ঢোকার সময়ে স্লোগান ওঠে, ‘‘হরিয়ানা কি জিত হামারি হ্যায়, অব দিল্লিকি বারি হ্যায়।’’ এর পরে একে একে ঝাড়খণ্ড ও মহারাষ্ট্রকে নিয়েও একই তালে স্লোগান ওঠে। এর পরে প্রথমে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা এবং মোদী বক্তৃতা করেন। বাকি তিন রাজ্য জয়ের লক্ষ্য শোনানোর পাশাপাশি নড্ডা আপকে ‘কট্টর গদ্দার দল’ বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘‘হরিয়ানায় সব আসনেই জমানত জব্দ হয়েছে।’’
আর মোদী বক্তৃতা শুরু করেন নবরাত্রির কথা বলে। নবরাত্রির ষষ্ঠ দিন মঙ্গলবার ছিল দেবী কাত্যায়নীর পুজো। সে কথা জানিয়ে মোদী বলেন, ‘‘মা কাত্যায়নীর হাতে পদ্মফুল থাকে। তিনি আমাদের আশীর্বাদ দেন। এমন পবিত্র দিনে হরিয়ানায় তৃতীয় বার পদ্ম ফুটেছে।’’ সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘গীতার ভূমিতে সত্যের জয় হয়েছে। বিকাশের, সুশাসনের জয় হয়েছে।’’
মঙ্গলবার হরিয়ানায় বিজেপি জিতলেও জম্মু-কাশ্মীরে জয় পেয়েছে ন্যাশনাল কনফারেন্স জোট। ওই জোটকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মোদী বলেন, ‘‘সবচেয়ে বড় জয় পেয়েছে ভারতীয় গণতন্ত্র। ভারতীয় সংবিধান পুরোপুরি চালু হওয়ার পরে প্রথম ভোট শান্তিতে হয়েছে। আর বিজেপি ভোট শতাংশের হিসাবে সবচেয়ে বড় দল হয়েছে।’’
তবে জম্মু-কাশ্মীর নয়, মোদী বেশি করে বলেন হরিয়ানার কথা। গুজরাত থেকে ত্রিপুরা, অসমের কথা উল্লখে করে মোদী দাবি করেন, যে যে রাজ্যে বিজেপি এক বার ক্ষমতায় এসেছে সেখানেই বারংবার জয় পেয়েছে। আর কংগ্রেসকে যখনই কোনও রাজ্য এক বার হারিয়েছে সেখানে আর ফেরাতে চায়নি। মোদী বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত হরিয়ানায় ১৩ বার বিধানসভা ভোট হয়েছে। তার মধ্যে ১০ বার সরকার বদল হয়েছে। কিন্তু বিজেপি টানা তিন বার জিতল।’’ এর কারণ হিসাবে মোদী দাবি করেন, কংগ্রেস এক বার জিতে গেলেই আর কাজ করে না। আর বিজেপি কাজের জন্যই ক্ষমতায় আসে। রাহুল গান্ধীর নাম না নিলেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি মোদী। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছেন তাঁরা মানুষকে জাতপাতের বিচারে দেখেন। নিম্নবর্গীয়দের উপরে অত্যাচার করেছে। কংগ্রেস বারবার নির্যাতন চালিয়েছে আদিবাসী, দলিতদের উপরে।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি ঠিক উল্টোটা করে। দলিত, আদিবাসীদের সম্মান করে।’’ মোদী দাবি করেন, হরিয়ানায় দলিত, আদিবাসীদের সংরক্ষণের সুবিধা কেড়ে নিয়ে ভোটব্যাঙ্কের উপকার করতে চেয়েছিল কংগ্রেস। সেটা হতে না দিয়ে মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। বাকি সবের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী বিনেশ ফোগটের হরিয়ানায় তৃতীয় বিজেপি সরকার ক্রীড়া ক্ষেত্রে জোর দেবে বলে জানিয়েছেন মোদী।