শর্ত সাপেক্ষে পুরীতে রথযাত্রার অনুমতি। —ফাইল চিত্র
রাত পোহালেই রথযাত্রা উৎসব। তার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে সোমবার শর্তসাপেক্ষে পুরীর রথযাত্রায় সায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্র, রাজ্য এবং মন্দির কমিটি সমন্বয়ে এই রথযাত্রা হতে পারে, এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে। এর জন্য গাইডলাইন মেনে চলতেও বলেছেন।
দিন কয়েক আগেই করোনায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় পুরীর রথযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে শীর্ষ আদালত। সেই রায় পুনর্বিচারের আবেদন করে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ওড়িশা সরকার। এ দিন তার প্রেক্ষিতেই শেষ পর্যন্ত রথযাত্রা উৎসবে ছাড় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
২৩ জুন থেকে পুরীতে রথযাত্রার উৎসব শুরু হওয়ার কথা ছিল। ১০-১২ দিন ধরে চলা এই উৎসবে লাখ লাখ মানুষের সমাগম হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির মধ্যে রথযাত্রা পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের হয়। জনস্বাস্থ্যের কথা ভেবে কার্যত রথযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে শীর্ষ আদালত। এর পর ওই রায় পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে আদালতে আবেদন করা হয়। তা শুনতে রাজি হয় শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে এ দিন মামলাটি শোনেন। সঙ্গে ছিলেন বিচারপতি এএস বোপান্না এবং দীনেশ মাহেশ্বরী। বিচারপতিরা সাফ জানিয়ে দেন, পুরী ছাড়া আর কোথাও রথযাত্রা হবে না। জনস্বাস্থ্য নিয়েও যে কোনও আপোষ করা যাবে না তা-ও স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র, রাজ্য এবং পুরীর মন্দিরের কমিটিকে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুরীর মন্দিরের তরফে রাজ্যের গাইডলাইন মেনেই উৎসব পালনের কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শব্দের গুরুত্ব বুঝে কথা বলা উচিত প্রধানমন্ত্রীর, গালওয়ান ইস্যুতে মোদীকে খোঁচা মনমোহনের
এ দিন কেন্দ্র এবং রাজ্য দুই সরকারই সুপ্রিম কোর্টকে জানায় যে তারা রথ যাত্রা উৎসবের পক্ষে। কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা শীর্ষ আদালতে বলেন, ‘‘রথযাত্রার সঙ্গে কোটি কোটি মানুষের বিশ্বাস জড়িয়ে রয়েছে। যদি প্রভু জগন্নাথ আগামিকাল না বেরিয়ে আসতে পারেন তা হলে প্রথা মেনে আগামী ১২ বছর তিনি আর বেরোতে পারবেন না।’’ কেন্দ্র শীর্ষ আদালতকে এ-ও জানিয়েছে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে রাজ্য প্রয়োজনে কার্ফু জারি করতে পারে। নির্দিষ্ট বিধিনিষেধ মানার আশ্বাসও দেওয়া হয় আদালতকে।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর থেকে ঢুকেছে ৪-৫ জঙ্গি? দিল্লিতে জঙ্গি হানার সতর্কতা
তুষার মেহতা আরও বলেন, ‘‘শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসা একটি প্রথা এ ভাবে বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে না। এক মাত্র করোনা রোগী নন এমন এবং জগন্নাথ মন্দিরের কর্মীরা এই উৎসবে যোগ দিতে পারেন।’’ এমনকি টিভিতে রথযাত্রা অনুষ্ঠান লাইভ চলাকালীন সাধারণ মানুষ আশীর্বাদ চাইতে পারেন বলেও আদালতকে জানায় কেন্দ্র।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্থগিত হয়ে যায় পুরীর রথযাত্রা। মামলার রায় দিতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘রথযাত্রার অনুমতি দিলে প্রভু জগন্নাথ আমাদের ক্ষমা করবেন না।’’ এ দিন অবশ্য শর্তসাপেক্ষে পুরীর রথযাত্রায় অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। তাতে স্বস্তি ফিরেছে ভক্তদের মধ্যে।